বাংলা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেল নারীসহ সকল ধর্মের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে নারী শিক্ষার্থীসহ সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত দেড় দশক ধরে ছাত্ররাজনীতির নামে ক্যাম্পাসগুলোতে যে ধরনের অপরাজনীতি চলেছে, তার প্রভাব থেকে শিক্ষার্থীরা এখনো বের হতে পারেনি। এই ভীতির কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চাইছে। তবে ছাত্রশিবির এই ভীতিকর রাজনীতিকে নিরপেক্ষভাবে মোকাবিলা করে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় ও সুস্থ রাজনৈতিক অংশগ্রহণে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল এমন একটি প্যানেল গঠন করা যেখানে নারী শিক্ষার্থীসহ সকল ধর্মের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। যখন সব ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাইবে, তখনই হল কমিটি ঘোষণা করা হবে।”
ছাত্রশিবির সভাপতি উল্লেখ করেন যে, কিছু ছাত্র সংগঠন নিজেদের স্বার্থ বা এজেন্ডার কারণে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তিনি সবাইকে আহ্বান জানান, এসব বিষোদগার পরিহার করে শিক্ষার্থী বান্ধব, সুস্থ ধারার কর্মসূচি পরিচালনা করতে। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র ভীতি ও বিভ্রান্তি নয়, বরং শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক, অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।”
তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে অনেকবার সংঘাত ও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। “শিবির এই ট্রমা থেকে শিক্ষার্থীদের বের করতে কাজ করছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা নিরাপদ পরিবেশে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারে এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি গড়ে ওঠে,” তিনি বলেন।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য, ছাত্ররাজনীতি যেন শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন, অধিকার ও অংশগ্রহণের জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। নারী শিক্ষার্থী ও সকল ধর্মের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি এই নীতিরই অংশ।”
ছাত্রশিবিরের এই ঘোষণা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ এটি ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমতার বার্তা পৌঁছে দেবে এবং ক্যাম্পাসে ইতিবাচক রাজনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটাবে।
সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দও প্যানেলের বৈচিত্র্যপূর্ণ গঠন এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও সমতা-ভিত্তিক রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে উঠবে।