ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ডাকসু ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেছেন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারীদের নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে। তিনি প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তাল হয়ে উঠল ছাত্ররাজনীতির মাঠ। সেখানে ছাত্রদল সমর্থিত ডাকসু ও হল সংসদ প্যানেলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারীদের নিয়ে একধরনের নোংরা ও অশোভন রাজনীতির চর্চা করছে, যা শুধু ক্যাম্পাস নয়, পুরো সমাজকে কলুষিত করছে। তার দাবি, শিবিরের এই কর্মকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তারা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে।
আবিদুল ইসলাম খান আরও উল্লেখ করেন, “যারা গুপ্ত রাজনীতি করছে তাদের চিহ্নিত করা সময়ের দাবি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে পদক্ষেপ নিক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে প্রশাসনের আচরণে আমরা স্পষ্ট পক্ষপাত লক্ষ্য করছি।”
তিনি বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিবিরের কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের অনেক কর্মকাণ্ড শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে তারা যে ধরনের রাজনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
অভিযোগের আঙুল শুধু শিবিরের দিকেই নয়, ছাত্রলীগের দিকেও তুলেছেন আবিদুল। তিনি বলেন, “বিভিন্ন প্যানেল ও কমিটিতে ছাত্রলীগ নিয়মিত অনুপ্রবেশ করছে। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।”
আবিদুল মনে করেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনেক কর্মকাণ্ড এখনও বিচারের মুখোমুখি হয়নি। তিনি বলেন, “যতদিন না আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের বিচার পাচ্ছে, ততদিন তারা রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতে পারবে না। তবে তাদের সংগঠিত অন্যায় ও অপরাধের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছাত্রদল সমর্থিত অন্যান্য প্রার্থীরাও একই সুরে কথা বলেন। তারা অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসে ভিন্নমতের রাজনীতি করার সুযোগ কমে গেছে। শিবিরের নোংরা রাজনীতি এবং ছাত্রলীগের প্রভাব শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।
মধুর ক্যান্টিনে আবিদুলের বক্তব্য ঘিরে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে বলেন, তার অভিযোগগুলো যৌক্তিক এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন। তবে আরেক অংশের শিক্ষার্থী মনে করেন, নির্বাচন ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একে অপরকে ঘায়েল করার কৌশল হিসেবেই এমন অভিযোগ তুলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থী মহলে আবিদুলের বক্তব্য দ্রুত আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে শিবিরকে ঘিরে যে অভিযোগগুলো তিনি তুলেছেন, তা এখন ক্যাম্পাস রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে।