বাংলা: কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক অনুষ্ঠানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, শিবিরের নেতাকর্মীরা ধর্ষণ বা চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত নয়। তিনি শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে আত্মনির্ভর হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “শিবিরের ছেলেরা কোনোভাবেই ধর্ষণ বা চাঁদাবাজির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। বরং তারা পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে দেশের উন্নয়ন ও সমাজ পরিবর্তনে কাজ করছে।”
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ‘উলিপুর উন্নয়ন ফোরাম’ আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার কৃতি শিক্ষার্থী এবং এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা জানানো হয়।
শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, “দেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা দিয়ে অন্তত চারটি জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা সম্ভব। রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি নিজের জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটানোর আন্দোলনে দিশা দেখিয়েছেন।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আহ্বান জানান আত্মনির্ভর হয়ে বড় হওয়ার জন্য। তার ভাষায়, “তুমি কোন পরিবারে জন্মেছ, সেটি বড় বিষয় নয়। বরং তুমি কোথায় যেতে চাও, কীভাবে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চাও, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্য স্থির করতে পারলেই সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘উলিপুর উন্নয়ন ফোরাম’-এর চেয়ারম্যান এবং কুড়িগ্রাম-৩ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দীন এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহেদী।
এছাড়াও জেলা ও উপজেলা জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মই আগামী দিনের রাজনীতি ও নেতৃত্বের আসল চালিকাশক্তি। কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি শুধু তাদের জন্য নয়, এটি পুরো সমাজের জন্য গৌরবের বিষয়।
অনুষ্ঠানে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানস্থল উৎসবমুখর পরিবেশে পরিণত হয় এবং উপস্থিত দর্শকরা শিবির সভাপতির বক্তব্যে বারবার করতালির মাধ্যমে সমর্থন জানান।
জাহিদুল ইসলাম তাঁর বক্তৃতার শেষাংশে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আজকের যুবকরাই আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্ব দেবে। তোমরা যদি সৎ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক হয়ে গড়ে ওঠ, তবে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।”
এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার পাশাপাশি সংগঠনটির ভাবমূর্তি নিয়েও পরিষ্কার বার্তা দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির মতো জঘন্য অপরাধ ইসলামী ছাত্রশিবির কখনো সমর্থন করে না, বরং এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজের জন্য অভিশাপ।”
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কেবল কৃতি শিক্ষার্থীরাই নয়, বরং উপস্থিত অভিভাবক ও এলাকাবাসীও ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্যে নতুন করে অনুপ্রেরণা পান।