close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

শেষ পর্যন্ত সত্যই টিকবে, মিথ্যা ধ্বংস হবে: তাসনিম জারা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Tasnim Jara strongly denied the false propaganda against her, saying no conspiracy can silence her voice. “Truth will prevail, lies will perish,” she asserted.

তাসনিম জারা অভিযোগ করেছেন, তাকে ঘিরে বারবার মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব ষড়যন্ত্র তাকে দমাতে পারবে না, সত্যই টিকে থাকবে, মিথ্যা ধ্বংস হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা এক শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, তাকে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে এসব গুজব তাকে বিভ্রান্ত বা ভীত করতে পারবে না। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, “শেষ পর্যন্ত সত্যই টিকে থাকবে, আর মিথ্যা একদিন ধ্বংস হবেই।”

শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত খবরের জবাব দেন। তিনি লিখেছেন, “সত্যটা তুলে না ধরলে মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। তাই কিছু বিষয় স্পষ্ট করা জরুরি মনে করছি।”

তাসনিম জারা বলেন, সম্প্রতি ভারতের একটি পোর্টাল তাকে নিয়ে ভুয়া খবর ছড়ায়। সেখানে দাবি করা হয়, তিনি নেপালে গিয়ে একজন মার্কিন অফিসিয়ালের সঙ্গে গোপন ব্রেকফাস্ট মিটিং করেছেন। অথচ বাস্তবে তিনি নেপালে গিয়েছিলেন নেপাল সরকারের আমন্ত্রণে, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য। নেপালের দূতাবাস তার সঙ্গে দুই মাস আগে থেকেই যোগাযোগ করেছিল বলে জানান তিনি।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “আমার সঙ্গে কোনো মার্কিন কর্মকর্তার দেখা হয়নি, কোনো মিটিংও হয়নি। অথচ সংবাদে বলা হলো, গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আসলে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”

এখানেই শেষ নয়, কক্সবাজার সফর নিয়েও তাকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। সেই সময়ে গুজব ছড়ানো হয়, তিনি নাকি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু পরে যারা এ খবর প্রকাশ করেছিল, তারাই দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, তারা গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যে ভরসা করেই খবরটি প্রচার করেছিল।

এছাড়া ১১ আগস্ট মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠককেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়। জারা স্পষ্ট করে জানান, এটি কোনো গোপন বৈঠক ছিল না; বরং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক রুটিন কার্যক্রমেরই অংশ ছিল। তিনি লিখেছেন, “আমরাই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ করি। অথচ যখন বিএনপি বা জামায়াত একই ধরনের বৈঠক করে, তখন সেটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হয় না। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে ছবি তুলে এমনভাবে দেখানো হয় যেন আমি গোপনে কিছু করতে যাচ্ছি। প্রশ্ন হচ্ছে, গোয়েন্দা সংস্থার আসল কাজ কি—দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নাকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কুৎসা রটানো?”

তিনি আরও যোগ করেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে অন্তত তিনবার একই ধরনের মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। আর প্রতিবারই গোয়েন্দা সংস্থার নাম সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তাসনিম জারার দাবি, আওয়ামী লীগের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু মিডিয়া এই ধরনের মিথ্যা বারবার ছড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে তাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, একই মিথ্যা প্রচারণা বারবার তুলে ধরে সেটিকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি লিখেছেন, “রাজনীতিতে নতুন কোনো শক্তি উঠে এলে তাকে দুর্বল করার জন্যই বিদেশি ষড়যন্ত্রের গল্প জুড়ে দেওয়া হয়। আমাকে নিয়েও তাই একই খেলা চলছে। তারা আমাকে বিদেশি শক্তির এজেন্ট বানাতে চাইছে। কিন্তু এসব প্রপাগান্ডা আমাকে থামাতে পারবে না।”

তার বক্তব্যে এক ধরনের দৃঢ়তা এবং চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। তিনি বলেন, “এসব মিথ্যায় আমাকে দমানো যাবে না। আমি আমার কাজে তথা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্যই লড়াই চালিয়ে যাবো। আমি জানি, সত্যের জয় হবেই। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে সত্য, আর ধ্বংস হবে মিথ্যা।”

তাসনিম জারার এই বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, বিরোধী পক্ষের শক্তি বাড়তে শুরু করলে প্রভাবশালী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে থাকে। আবার অন্যরা মনে করছেন, গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও তার এই বক্তব্য প্রশ্ন তুলেছে, যা আরও বিতর্ক তৈরি করবে।

তবে একথা নিশ্চিত, তাসনিম জারা তার সরাসরি বক্তব্যে শুধু নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি, বরং রাজনৈতিক প্রচারণায় সত্য ও মিথ্যার লড়াই কতটা গভীর হতে পারে, তাও সামনে নিয়ে এসেছেন।

No comments found