রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারবিরোধী নাশকতার গোপন পরিকল্পনার অভিযোগে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে প্রশাসন। গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ক্যাম্পাসে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র, উসকানি ও নাশকতার পরিকল্পনা চলছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বসবাসরত অন্যদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে বলা হয়, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, শেকৃবির কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তারা নাশকতা ও উসকানির উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে গোপন বৈঠক করেছেন বা করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে বসবাসরত সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায় নেবে না।
শেকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আরফান আলী বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের কাছে সরাসরি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সতর্ক করেছে, তাই আমরা ক্যাম্পাসের সবাইকে সতর্ক করেছি।"
এই ঘটনাটি নতুন করে আলোচনায় আসে যখন সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থানরত নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের তিন নেতাকে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে দুইজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলেও একজনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক কার্যক্রম ও গোপন বৈঠক নিয়ে আগে থেকেই প্রশাসন সতর্ক ছিল। তবে সাম্প্রতিক এই নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কঠোর অবস্থান নেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে, যাতে কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।
ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের অনেকে মনে করছেন, এই সতর্কবার্তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি পূর্বপ্রস্তুতি, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, বিষয়টি রাজনৈতিক প্রভাবিত হতে পারে। তবে যে যাই ভাবুক না কেন, শেকৃবি এখন কঠোর নজরদারির আওতায় এবং যেকোনো সময় অভিযানের সম্ভাবনা রয়েছে।