গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অস্বীকার করা যায় না, তবে ইতিহাসের হিরোরা সময়ের সাথে ভিলেনে পরিণত হন। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৬ বছরের শাসনকে দেশের জন্য ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন।
ঠিক আছে, আমি আপনার দেয়া নিউজটি নির্দেশনা অনুযায়ী রি-রাইট করে দিচ্ছি —
হেডলাইন (বাংলা, SEO-অপ্টিমাইজড):
শেখ মুজিবের অবদান অস্বীকার নয়, তবে সময়ের আবর্তে ভিলেনে পরিণত: নুরুল হক নুরের তীব্র সমালোচনা
শর্ট ডিসক্রিপশন (বাংলা):
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অস্বীকার করা যায় না, তবে ইতিহাসের হিরোরা সময়ের সাথে ভিলেনে পরিণত হন। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৬ বছরের শাসনকে দেশের জন্য ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন।
Short Description (English):
Nurul Haque Nur, President of Gono Odhikar Parishad, acknowledged Sheikh Mujibur Rahman’s role in the Liberation War but said heroes can turn into villains over time. He termed Sheikh Hasina’s 16-year rule as devastating for Bangladesh.
পূর্ণ নিউজ:
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, “বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে গেলে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দেয়া সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অবশ্যই রয়েছে। ১৯৭২ সালের আগ পর্যন্ত তিনি একজন সংগ্রামী নেতা ছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের অনেক হিরো সময়ের সাথে ভিলেনে পরিণত হয়েছেন। শেখ সাহেবও সেই হিরো থেকে ভিলেনে রূপ নিয়েছেন। আর তার মেয়ে শেখ হাসিনা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছেন, যা ভিলেনের থেকেও জঘন্য।”
গত সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা একটি বড় ভুল করেছিলাম—শেখ মুজিবুর রহমানকে দেবতা বা অবতার ভেবে সব ক্ষমতা তার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই অবিসংবাদিত নেতা একসময় একদলীয় স্বৈরশাসন, বাকশাল ও ফ্যাসিবাদের পথে হেঁটেছিলেন। তার মেয়ে গত ১৬ বছরে দেশের গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করে ভারতীয় প্রভাবের অধীনে দেশকে এক প্রকার নরকে পরিণত করেছেন। এই অপরাধের সাজা যেমন পিতা পেয়েছেন, তেমনি কন্যাও পেয়েছেন।”
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “ইতিহাসের বড় শিক্ষা হলো—কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। গত ১৬ বছরে যারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত ছিল, আজ তারাই ক্ষমতার লোভে দানবে পরিণত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় দখলদারি, চাঁদাবাজি, মানুষের উপর জুলুম চলছে। এমনকি বিরোধী দলের কর্মীদের এলাকায় থাকতে দিয়ে তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ যেমন করেছিল, ছাত্রলীগ-যুবলীগ যেমন করেছিল—তেমনই এখন কিছু মানুষ করছে। অথচ সীমান্ত দিয়ে আওয়ামী নেতারা কাপড় ছাড়া পালিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীও পালানোর সময় জুতা পরার সুযোগ পাননি। তবুও যদি কেউ শিক্ষা না নেয়, ভবিষ্যতে তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকে হয়নি। কোনো নেতার নির্দেশে হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষ, ছাত্র, যুবক ও তরুণরা সময়ের প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেছিল। এর সূত্রপাত হয়েছিল ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে। সেই আন্দোলনে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্র মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।”
সংসদের উচ্চকক্ষে সব দলের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবিতে নুরুল হক নুর বলেন, “বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনে আনুপাতিক হারের পদ্ধতি চায়। উচ্চকক্ষে সব দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলে কার্যকর সংসদ গঠন সম্ভব। তাই আমরা বলেছি, আগামী নির্বাচন থেকেই যেন উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়।”
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কাকে ভোট দেবে। মাত্র ১২ শতাংশ বিএনপিকে ভোট দিতে চায়, ১০ শতাংশ জামায়াতকে ভোট দিতে চায়। অর্থাৎ ২২ শতাংশ ভোট নিশ্চিত, কিন্তু বাকি ৪৮ শতাংশের ভোট কারও দিকে নয়। এই সুযোগ তরুণদের কাজে লাগাতে হবে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নুরুল হক নুর বলেন, “যারা ট্রাক মার্কায় গণঅধিকার পরিষদের হয়ে নির্বাচন করতে চান, তারা যদি জনগণকে বোঝাতে পারেন যে পুরোনো ধারা আর চলবে না, তরুণরা সুযোগ চায়, তাহলে মানুষ আপনাদের সমর্থন করতে পারে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “ডাকসু নির্বাচনে যখন অংশ নিয়েছিলাম, তখন অনেকেই আমাদের নিয়ে উপহাস করেছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে তার জবাব দিয়েছে।”
গণঅধিকার পরিষদের রাজশাহীর আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদলের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সমাবেশে ছাত্র অধিকার, যুব অধিকার এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায়ও তিনি একই ধরনের মন্তব্য করেন।