অন্তর্বর্তী সরকার স্পষ্ট করেছে—পলাতক আসামি শেখ হাসিনার অডিও বা বক্তব্য প্রচার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো সংবাদমাধ্যম এ আইন ভাঙলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে এক সরকারি বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সতর্কবার্তা জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশে নিষিদ্ধপ্রাপ্ত দল আওয়ামী লীগের নেত্রী এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্য বা অডিও প্রচার করা গুরুতর আইন লঙ্ঘন। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে এই কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক প্রাক্তন স্বৈরশাসকের ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল। তবুও দুঃখজনকভাবে কিছু গণমাধ্যম সম্প্রতি শেখ হাসিনার একটি অডিও বার্তা প্রচার করেছে, যেখানে মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়। এই ধরনের বেআইনি কাজ সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করার পাশাপাশি দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকেও বিপন্ন করছে।
বিবৃতিতে কড়া ভাষায় বলা হয়, শেখ হাসিনা গত জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সময় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের মুখে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং এখনো তার বিচার প্রক্রিয়া চলমান। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারা অনুযায়ী তাদের যেকোনো নেতার বক্তব্য, বার্তা বা প্রচারণা প্রচার করা আইনের পরিপন্থী।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, “জাতির ইতিহাসের এই সংকটময় মুহূর্তে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। জনগণ প্রথমবারের মতো একটি সত্যিকারের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।”
সরকারি বিবৃতিতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়, শেখ হাসিনার যেকোনো বক্তব্যই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। তাই সংবাদমাধ্যম বা ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ তার বক্তব্য প্রচার করলে তা সরাসরি গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাঁধা সৃষ্টি করবে। এসব কর্মকাণ্ড কেবল জনগণকে বিভ্রান্ত করবে না, বরং দেশের স্থিতিশীলতার জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্পষ্ট ঘোষণা—যে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গণমাধ্যম যদি শেখ হাসিনা বা নিষিদ্ধপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের বার্তা প্রচার করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার বলেছে, তারা ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক অখণ্ডতার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। তাই বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী যেকোনো বক্তব্যকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।