close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আদালত অবমাননার মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘিরে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য, রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন।..

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে একটি চাঞ্চল্যকর রায়। আদালত অবমাননার এক মামলায় দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক এবং বিচারিক পরিমণ্ডলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বুধবার, ২ জুলাই দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ। ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন এবং আদেশে তাৎক্ষণিক কার্যকর করার কথাও উল্লেখ করেন।

এছাড়াও, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের বাসিন্দা শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলম (বয়স ৪০)–এর বিরুদ্ধেও একই মামলায় দুই মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। এই ব্যক্তিকে মামলায় সম্পৃক্ত হিসেবে দায়ী করা হয় আদালত অবমাননার কিছু মন্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের জন্য।

মামলার বিবরণী অনুযায়ী, কিছু বক্তব্য এবং মন্তব্যের মাধ্যমে আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হয়েও বিচার বিভাগ সম্পর্কে একাধিক মন্তব্য দেন তিনি, যা আদালতের দৃষ্টিতে অবমাননাকর এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী জানান, “নিয়মিত আদালতের কাঠামো এবং সম্মান রক্ষা করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনো অবস্থান থেকেই যদি কেউ আদালতকে অবমাননা করেন, সেটি যেমনই হোক না কেন, সেটির শাস্তি হবে।”

রায় ঘোষণার পরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা এই রায়কে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এবং ‘বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগের ফল’ বলে দাবি করেন।

অন্যদিকে, বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “আইনের চোখে সবাই সমান—এই রায় সেটিই প্রমাণ করে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এ ধরনের রায় অত্যন্ত বিরল। কোনো বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে আদালত অবমাননার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসান বলেন, “এই রায় দেশের আইনের শাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো যে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়—even যদি তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।”

রায়ের খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। কেউ কেউ এটিকে আইন প্রতিষ্ঠার দৃঢ়তা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে ‘নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নাটক’ বলে অভিহিত করছেন।

ঢাকার এক বাসিন্দা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি চাকরিজীবী বলেন, “দেশের বিচার ব্যবস্থা যদি সত্যিই স্বাধীন হয়, তাহলে এটাই প্রমাণ। কিন্তু এই রায় কতটা কার্যকর হবে বা বাস্তবায়ন হবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।”

শেখ হাসিনাকে দেওয়া এই ৬ মাসের কারাদণ্ড শুধু একটি রায় নয়—এটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের চিন্তাধারায় এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে কি না এবং ভবিষ্যতে এর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব কতদূর বিস্তৃত হবে।

No comments found