অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেছেন, একসময় যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন শেখ হাসিনা, আজ তিনিই তা চান। তিনি মন্তব্য করেন—এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।
হেডলাইন (SEO-অপ্টিমাইজড)
শেখ হাসিনাও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান, ভূতের মুখে রাম নাম: অ্যাটর্নি জেনারেল
শর্ট ডিসক্রিপশন (বাংলা)
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেছেন, একসময় যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন শেখ হাসিনা, আজ তিনিই তা চান। তিনি মন্তব্য করেন—এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।
Short Description (English)
Attorney General Asaduzzaman said that Sheikh Hasina, who once abolished the caretaker government system, now wants it back. He remarked that this is like "a ghost chanting holy words."
সম্পূর্ণ নিউজ (কমপক্ষে ২ পৃষ্ঠা আকারে রি-রাইট)
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, যিনি একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন, সেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এখন আবার সেই ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন চান। তার ভাষায়—“এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।”
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। দিনটিতে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির অনুমতি দেয়। এর পরপরই অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে এই বক্তব্য তুলে ধরেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ আমরা আদালতে বলেছি, আমরা আবারও সেই ব্যবস্থায় ফিরতে চাই। দেশের জনগণ এখন বিশ্বাস করে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো ভাই তার ভাইকে হারাবে না, কোনো সন্তানকে মায়ের কোল খালি হয়ে যেতে হবে না। আর রক্ত দিয়ে ভোটের অধিকার আদায় করতে হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “অতীতে আওয়ামী লীগ বলত, কখনো অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তবে আওয়ামী লীগ নিজেরাই অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতায় থেকেছে। এখন যখন তারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে, তখন তা নিঃসন্দেহে ভূতের মুখে রাম নাম শোনার মতো।”
অ্যাটর্নি জেনারেলের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এই মন্তব্যের গুরুত্ব অনেক। কারণ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক চলেছে। ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রথম এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। পরে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এটি বাতিল করে দেয়। এর পর থেকে জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশব্যাপী বিরোধ ও সহিংসতা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেলের মন্তব্যে উঠে এসেছে সেই সহিংস অতীতের বেদনাদায়ক চিত্রও। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ। তখন আর কোনো মায়ের চোখে অশ্রু ঝরবে না, কোনো ভাই তার বোনকে হারাবে না। দেশের মানুষ শান্তিতে ভোট দিতে পারবে।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বক্তব্যে শুধু বর্তমান রাজনৈতিক সংকটই নয়, বরং ভবিষ্যতের নির্বাচন ব্যবস্থার দিকনির্দেশনাও পাওয়া যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের ভেতরেও এই মন্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, শেখ হাসিনা যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছিলেন, এখন যদি তিনি আবার সেই ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন, তবে তা রাজনৈতিক ইতিহাসে বড় ধরনের পালাবদল ঘটাবে।
বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বিষয়টি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল দীর্ঘদিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। এবার অ্যাটর্নি জেনারেলের এই বক্তব্যে তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হলো। একইসাথে সরকারের ভেতরেও দ্বন্দ্ব বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারায় এ মন্তব্যের প্রভাব কতটা গভীর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার—তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এখন আর কেবল বিরোধী দলের দাবি নয়; এটি আবার জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।