close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সবার আগে বিপদে পড়বে জামায়াত, তারপর বিএনপি , গোলাম মাওলা রনি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গোলাম মাওলা রনি বললেন, রাজনীতিতে সবার আগে জামায়াত বিপদে পড়বে, এরপর বিএনপি। জাতীয় নির্বাচন ২০২৮ সালের আগে অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি এক টকশোতে।..

দেশের রাজনীতিতে ধ্বংসের ঘণ্টাধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তার মতে, বর্তমানে যে ধোঁয়াশাপূর্ণ এবং অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে প্রথম ধাক্কায় জামায়াতে ইসলামি সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরপর ধ্বংসের স্রোতে গা ভাসাতে বাধ্য হবে বিএনপি।

সম্প্রতি দেশের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে। তিনি বলেন, রাজনীতি খুবই প্রতিহিংসাপরায়ণ জায়গা। এখানে কেউ কাউকে ক্ষমা করে না। যুদ্ধের ময়দানেও অনেক সময় শত্রুকে ক্ষমা করা হয়, কিন্তু রাজনীতিতে তার কোনো স্থান নেই।

রনি জানান, বর্তমান সরকার আমলে যারা নিগৃহীত ও অপমানিত হয়েছেন, ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় এলে সেই প্রতিশোধ কড়ায় গণ্ডায় তুলে নেবেন। তার ভাষায়, এটাই হবে দেশের নিয়তি।

চলমান রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে তিনি ভীষণ হতাশা প্রকাশ করেন। বলেন, এই সংস্কারগুলো কিছুই কাজে আসবে না। এগুলো মূলত ‘অশ্বডিম্ব’— মানে যার বাস্তবায়ন অসম্ভব। যারা এই সংস্কার পরিকল্পনা করছেন, তারা কখনো আমেরিকার নকল করছেন, কখনো ভারতের। কিন্তু তারা বাংলাদেশের বাস্তবতাকে বুঝতেই পারছেন না।

তিনি দাবি করেন, এভাবে চলতে থাকলে শুধু অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে, বাস্তব কোনো লাভ নেই।

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে গোলাম মাওলা রনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেও কোনো জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। ২০২৬ সালেও নির্বাচন হবে না। ২০২৭ সালে সম্ভাবনা অর্ধেক-অর্ধেক। তবে ২০২৮ সালে নির্বাচন হওয়াই একমাত্র বাস্তবতা।

তিনি আরও বলেন, “২০২৬-২০২৭ সালের মধ্যে রাজনৈতিক খেলোয়াড়ের সেট বদলাতে হবে। এই সেটআপে জাতীয় তো দূরের কথা, স্থানীয় নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয়।

রনি বলেন, জামায়াতকে টার্গেট করা শুরু হয়ে গেছে। ধর্ম সংক্রান্ত যে ঘটনাগুলো ঘটছে— মাজার ভাঙা, ধর্মীয় উস্কানি— এসবের দায় জামায়াতের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে, অথচ তারা এসব ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়। তাদের ঘোর শত্রু ইসলামি সংগঠনগুলো এসব করছে। কিন্তু দায় নিচ্ছে জামায়াত।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই দায়গুলোই জামায়াতকে সবার আগে শেষ করে দেবে।

বিএনপিও রেহাই পাবে না
জামায়াতের পরেই বিপদে পড়বে বিএনপি— এমন বক্তব্য দেন রনি। তার মতে, “এখন হয়তো আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী চাঁদাবাজি করছে, কিন্তু নাম উঠছে বিএনপির। এতে করে বিএনপি আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে।”

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এমন এক ঘূর্ণিপাকে আটকে গেছে, যেখান থেকে তাদের মুক্তি অসম্ভব— যতক্ষণ না নতুন নেতৃত্ব আসে।”

রাজনীতিতে সমাধান নয়, প্রতিশোধই ভবিষ্যৎ?
গোলাম মাওলা রনি আরও বলেন, “যারা এখন ক্ষমতার বাইরে আছেন, তাদের মধ্যে অনেক ক্ষোভ জমে আছে। তারা যদি ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তবে আগের অপমান ও নিপীড়নের প্রতিশোধ নেবেনই। এটাই বাংলাদেশে রাজনীতির বাস্তবতা।”

এই বক্তব্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে রনির মন্তব্যকে সময়োচিত ও বাস্তব মনে করছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এতে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

তবে একথা বলতেই হচ্ছে— রনির এই মন্তব্য দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির চালচিত্র সম্পর্কে নতুন করে ভাবার সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সত্যিই কি ২০২৮-এর আগে দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না? কিংবা জামায়াত ও বিএনপির রাজনীতির কপালে কি তাহলে সত্যিই অন্ধকার জমে উঠেছে?

Ingen kommentarer fundet