শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলাকে একীভূত করে একটি সংসদীয় আসন গঠনের প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতন জনগণ লিখিত আপত্তি জানিয়েছেন। গত ৩০শে জুলাই নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সাতক্ষীরা-৩ (কালিগঞ্জ-দেবহাটা) এবং সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-আশাশুনি) আসনের নতুন সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এর বিরুদ্ধে স্থানীয়রা আপত্তি তুলে ধরে বলেছেন যে এটি 'জনস্বার্থবিরোধী, অযৌক্তিক ও প্রশাসনিক নীতিমালা পরিপন্থী'।
বুধবার (২০ আগস্ট '২৫) কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মণ্ডলের কাছে এ বিষয়ে লিখিত আপত্তিপত্র দাখিল করেন সাতক্ষীরা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল ওহাব সিদ্দিকীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আপত্তিপত্রে উল্লেখ করা হয় যে সাতক্ষীরার ভৌগলিক ও জনসংখ্যাগত বাস্তবতায় জেলায় পাঁচটি সংসদীয় আসন থাকা যৌক্তিক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৯ বছর এ সীমানা বহাল ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সিদ্ধান্তে সাতক্ষীরায় পাঁচটি আসন থেকে কমিয়ে চারটি আসনে রূপান্তর করা হয় এবং এরপর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটি কার্যকর ছিল।
স্থানীয়দের মতে, দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা শ্যামনগর এবং উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ আশাশুনি দুই ভিন্ন ভৌগলিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতার অঞ্চল। এ দুটি উপজেলাকে একীভূত করে একটি আসন গঠন করলে উন্নয়ন ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে জনগণ অনেকাংশে বঞ্চিত হবে। ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্তে শ্যামনগর ও আশাশুনির সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। এ কারণে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে।
তাদের দাবি, সাতক্ষীরার প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, ভৌগলিক ও প্রাকৃতিক বাস্তবতা বিবেচনায় জেলায় পাঁচটি সংসদীয় আসন পুনঃবহাল করা জরুরি। এটি এলাকার সার্বিক উন্নয়ন, সুষম প্রতিনিধিত্ব ও জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাবে।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তারা মনে করেন, এই পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতি হবে। তাদের মতে, সাতক্ষীরার ঐতিহাসিক ও ভৌগলিক প্রেক্ষাপটে পাঁচটি আসন অপরিহার্য। রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং জনগণের সুষম প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে এটি অপরিহার্য।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের নিকট যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
