সাতক্ষীরায় জলবায়ু অভিযোজন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি প্রকল্পের সাফল্য..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার দেবহাটায় জলবায়ু অভিযোজন ও সামাজিক সচেতনতায় অভিনব উদ্যোগ

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে জলবায়ু অভিযোজন এবং সামাজিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতন করার প্রচেষ্টা চলছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে সম্প্রতি একটি গণসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বাল্যবিবাহ, যৌতুক এবং বহুবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আনন্দ। জার্মানভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা বিএমজেড এবং ওয়েল্থহাঙ্গারহিলফে-এর সহযোগিতায় পরিচালিত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য জলবায়ু অভিযোজনের সাথে সাথে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি এবং আনন্দ ও প্রেরণা সংস্থার কর্মকর্তারা। আনন্দ প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম এই উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের সামাজিক সমস্যাগুলোও সমানভাবে সমাধান করা প্রয়োজন, যা স্থানীয় উন্নয়নে সহায়ক হবে।'

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল বাল্যবিবাহ, যৌতুক এবং বহুবিবাহের মতো সামাজিক সমস্যাগুলোর ওপর ভিত্তি করে পরিবেশিত নাটক। স্থানীয় শিল্পীরা তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন, যা উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। নাটকের পাশাপাশি লোকসংগীতও পরিবেশন করা হয়, যা গণসচেতনতামূলক বার্তাগুলোকে আরও সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত হয়েছে। এই উদ্যোগটি স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং একটি সুস্থ ও স্থিতিস্থাপক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সাতক্ষীরার এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র স্থানীয় পর্যায়ে নয়, বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নজর কেড়েছে। এটি ভবিষ্যতে অন্য অঞ্চলেও অনুকরণীয় হতে পারে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন ও সামাজিক সমস্যার সম্মিলিত সমাধান প্রয়োজন। এই ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি টেকসই ও সচেতন সমাজ গড়ে তোলার সম্ভাবনা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে।

Hiçbir yorum bulunamadı