শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরা, আগস্ট ৫, ২০২৫: সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এক বিশাল গণ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার বিকালে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে মিছিলটি শুরু হয়, যা নিউমার্কেট মোড়, তুফান মোড় হয়ে বড়বাজার সড়কে পৌঁছে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। মিছিলটি বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে শুরু হয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে শতশত মানুষ এই মিছিলে অংশ নেয়। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক মিছিলটির নেতৃত্ব দেন। মিছিল পূর্ব সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায়। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি সহ: অধ্যাপক ওমর ফারুখ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য এড. আব্দুস সুবহান মুকুল, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বারী, জেলা অফিস সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, শহর জামায়াতের আমীর জাহিদুল ইসলাম, সদর জামায়াতের আমীর মাওলানা মশারফ হোসেন, শহর সেক্রেটারি খোরশেদ আলম এবং সদর সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান।
প্রধান অতিথি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, "১৬ বছর পর দেশ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ হাজার হাজার শহীদের দেশ হচ্ছে এ বাংলাদেশ। বিগত ৫৩ বছরে কোন শাসকের পক্ষে বাংলাদেশে শান্তি উপহার দেয়া সম্ভব হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে এদেশের মানুষ একটি মানবিক বাংলাদেশ দেখতে চায়। এ ধরনের একটি মানবিক বাংলাদেশ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে না পারলে জনগণ আপনাদেরকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।"
তিনি আরও বলেন, "এদেশের মানুষ মনে করে জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে। তাই মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে এত ভালোবাসে। আগামীর বাংলাদেশ হবে জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ।"
এই মিছিলের আগে সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয় মাঠ থেকে শহর শিবিরের সভাপতি আল মামুনের নেতৃত্বে ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি খুলনা রোড মোড় হয়ে নিউমার্কেটে যেয়ে শেষ হয়।
মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সাধারণ জনগণ এবং নেতাকর্মীরা তাদের বক্তব্যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্ব উল্লেখ করেন। অনেকেই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশজুড়ে এই ধরনের কর্মসূচি সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে, এর ফলে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।
এই মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টা করছে। এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তারা জনগণের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।