সাতক্ষীরায় আদালত চত্বরে পিতার সাথে সন্তানের হৃদয়বিদারক পুনর্মিলন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার আদালত চত্বরে পিতার সাথে সন্তানের পুনর্মিলন ঘটে আদালতের আদেশে

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার জজ কোর্ট চত্বরে সোমবার (২৫ আগস্ট, ২০২৫) এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে, যেখানে আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও পিতার সাথে পুত্রের পুনর্মিলনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হয়। ঘটনাটি ঘটে যখন মো. মনিরুজ্জামান তার চার বছরের শিশু পুত্র আলিফ হাসানকে কোলে নিতে চাইলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন জোরপূর্বক তাকে বাধা দেয়। আদালত তাদের প্রতি মাসে একবার দেখা করার অনুমতি দিলেও, এই নির্দেশনা মানা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মনিরুজ্জামান ও মেধা আক্তার সোনিয়ার মধ্যে বিবাহ হয় ২০১৯ সালের ৯ জুলাই। তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তান জন্ম গ্রহণ করে। কিন্তু ১৩ জুন ২০২৫ তারিখে মেধার মা মাকসুদা বেগম তার মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান এবং তারপর থেকে তাকে স্বামীর বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। মনিরুজ্জামান এই বিষয়ে আদালতে ১০০ ধারার একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মনিরুজ্জামানকে প্রতি মাসে তার সন্তানকে দেখার এবং তার ভরণপোষণের খরচ বহনের নির্দেশ দেন।

সোমবার মনিরুজ্জামান যখন আদালতের আদেশ অনুযায়ী তার সন্তানকে কোলে নিতে যান, তখন শ্বশুর বাবুল ফরাজী ও তার কয়েকজন সঙ্গী তাদের উকিলের প্ররোচনায় মারমুখী অবস্থান নেন এবং মনিরুজ্জামানকে গালিগালাজ করেন।

এই ঘটনার সময় আদালত চত্বরে ভিড় জমে যায়। জনগণের চাপের মুখে অবশেষে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মনিরুজ্জামানের কাছে তার সন্তানকে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়। সন্তানের পিতার কোল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনিরুজ্জামান।

এই ঘটনা পরিবার ও সমাজের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা এবং আদালতের আদেশের গুরুত্বকে পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। আদালতের আদেশ মান্য করার গুরুত্ব এবং পারিবারিক মীমাংসায় মানবিকতার ভূমিকা এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে এবং শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ও পারিবারিক সম্পর্ক রক্ষার্থে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত। 

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই পারিবারিক সম্পর্কের অনন্য গুরুত্ব এবং মানবিকতার বিজয়কে তুলে ধরেছেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, সমাজে পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব এবং আদালতের নির্দেশনা মানার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

Hiçbir yorum bulunamadı