দুই মাসের সাংগঠনিক বিরতি শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের ওপর দেওয়া শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার করেছে। এতে তিনি পুনরায় দলের সব কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের ওপর দেওয়া শোকজ নোটিশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেছে। এর মাধ্যমে দলটির ভেতরে চলমান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবসান ঘটল এবং সারোয়ার তুষার পুনরায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলেন।
এনসিপি সূত্র জানায়, গত ১৭ জুন সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে ‘নৈতিক স্খলনজনিত’ অভিযোগ এনে তার কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি দলের শৃঙ্খলা কমিটির কাছে লিখিত জবাব দাখিল করেন। জবাবে তিনি অভিযোগের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন এবং নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন।
দলের শৃঙ্খলা কমিটি তার জবাব বিশ্লেষণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া ফোনালাপসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, সারোয়ার তুষারকে দুই মাসের জন্য সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।
এ সময় তিনি জুলাই মাসের পদযাত্রা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে এনসিপির প্রতিনিধিত্ব, বিভিন্ন গণমাধ্যমে দলের বক্তব্য উপস্থাপন এবং নরসিংদীতে আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ সব কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলেন। এতে স্পষ্ট হয়, তিনি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেননি এবং নির্দেশনা মেনে চলেছেন।
দুই মাসের এই বিরতি শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সারোয়ার তুষারকে পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত নেয়। দলটির একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর ফলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট শোকজ নোটিশও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত এনসিপির ভেতরে শৃঙ্খলাবোধকে শক্তিশালী করবে এবং দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ধরে রাখতে সহায়তা করবে। তারা মনে করছেন, সারোয়ার তুষারের মতো নেতৃত্বকে দলে ফেরানো মানে এনসিপি আবারও রাজনৈতিক ময়দানে পূর্ণ শক্তিতে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
সারোয়ার তুষারও বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “দল আমার প্রতি যে আস্থা রেখেছে তার মর্যাদা রাখব। আমি সবসময়ই এনসিপির আদর্শ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও সেই পথেই থাকব।”
রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, এনসিপি এখন আসন্ন জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করবে। সারোয়ার তুষারের পুনরাগমন সেই প্রচেষ্টাকে আরও গতিশীল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।