সাভারের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্কুলছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়ামের হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাহুল চন্দকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) পদে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বারিউল করিম খান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে এই বদলি আদেশের প্রেক্ষিতে রাজাপুর উপজেলার মানুষ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এবং দাবি করেছে যে রাহুল চন্দকে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজাপুর উপজেলা পরিষদের সামনে রাহুল চন্দের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া সুমন, উপজেলা ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি জাহিদ মাস্টার এবং উপজেলা জামায়াতের আমির কবির হোসেন। বক্তারা অভিযোগ করেন যে, ছাত্রলীগ থেকে আসা এই কর্মকর্তা রাহুল চন্দ গুলি ও হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শাস্তি পাওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনিক দায়িত্বে বহাল রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৫ আগস্ট সাভারে এক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের গুলি চালানোর নির্দেশ দেন রাহুল চন্দ, যার ফলে সাভার ডেইরি ফার্ম স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়ামসহ অনেকেই নিহত হন। এই হত্যার অভিযোগে সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির গত ৬ জুন সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং ওবায়দুল কাদেরসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে প্রশাসনিক বিচারহীনতার উদাহরণ হিসেবে দেখছেন এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে। ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে আইনগত ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন।