close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাষ্ট্রপতির ছবি থাকা না থাকা নিয়ে ব্যস্ত সরকার : রুমিন ফারহানা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
BNP leader Rumeen Farhana criticized the government, saying it is busy debating over the president’s portrait while neglecting law and order and citizens’ safety.

বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা বলেছেন, রাষ্ট্রপতির ছবি থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে সরকার ব্যস্ত, অথচ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের মূল দায়িত্বে কোনো মনোযোগ নেই।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, সরকার রাষ্ট্রপতির ছবি থাকবে কি থাকবে না, সেই তুচ্ছ বিতর্কে ব্যস্ত থেকেছে, অথচ দেশের মূল সমস্যা আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে গুরুত্ব দেয়নি। এতে সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে এবং দেশ সঠিক পথে অগ্রসর হতে পারছে না।

২০ আগস্ট জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় ‘অন্য মঞ্চে’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, “গত এক বছরে সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা, প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল রাখা। কিন্তু সেই জায়গায় মনোযোগ না দিয়ে সরকার রাষ্ট্রপতির পোর্ট্রেট সরানোর মতো ছোট ছোট বিষয়ে ব্যস্ত থেকেছে। এমনকি কেন এই ছবি সরানো হলো, সে ব্যাপারে কোনো সরকারি ব্যাখ্যা নেই। যদি সত্যিই ‘নো পোর্ট্রেট’ নীতি থাকে, তাহলে প্রজ্ঞাপন দিয়ে জনগণকে জানানো উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “দেশ এখন এক ধরনের অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। সরকারের প্রধান দায়িত্ব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলেও সাধারণ মানুষ আজ ভয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তারা চায় দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকার গঠিত হোক। মানুষের বিশ্বাস, যেকোনো নির্বাচিত সরকারই অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো।”

নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বারবার বলেছেন যে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে, কিন্তু জনগণ এই আশ্বাসকে বিশ্বাস করতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব এবং একে অপরকে ঘিরে সন্দেহের পরিবেশ নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, “জামায়াত পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করছে, আবার নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি এখনও নিবন্ধন পায়নি। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেটি নিয়েও দেশে ভিন্ন মত রয়েছে। একপক্ষ মনে করছে আওয়ামী লীগ মূলত একটি ‘মাফিয়া গ্রুপ’, অন্যপক্ষ বলছে আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।”

রুমিন ফারহানা সতর্ক করে বলেন, “মাঠের বাস্তবতা হলো প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা বা ব্যবসায়ীদের অর্থসংক্রান্ত হত্যার ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে অবস্থায় থাকা উচিত, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে, তা নেই। এই অবস্থায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা কঠিন।”

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার নিজেই আত্মবিশ্বাসী নয় বলেই বারবার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিচ্ছে। তার ভাষায়, “যখন একই কথা বারবার বলতে হয়, তখন তা সরকারের নিজের আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ। অথচ নির্বাচন মানেই তো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবারই নির্বাচনের আগে নানা বাড়তি বিশেষণ যোগ করা হয়। এতে জনগণের আস্থা আরও ক্ষুণ্ণ হয়।”

শেষে তিনি বলেন, “যদি সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন রোডম্যাপ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যমত্য আনার দিকে মনোযোগী হতো, তাহলে দেশ ইতিমধ্যেই সঠিক পথে এগিয়ে যেত। কিন্তু এখনো সেই বাস্তব পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না।”

No comments found