close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাষ্ট্রপতির ছবি নামিয়ে ফেলার মৌখিক নির্দেশ কেন দরকার পড়লো..

Mamun Sorder  avatar   
Mamun Sorder
Short Description (English): Nearly all of Bangladesh’s 82 embassies abroad removed the President’s portrait following an oral order. Former diplomats question why legal procedures were bypassed for s..

শর্ট ডিসক্রিপশন (বাংলা): বিদেশে ৮২টি দূতাবাসের প্রায় সবগুলো থেকেই রাষ্ট্রপতির ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে মৌখিক নির্দেশে। কেন আইনি সিদ্ধান্ত না নিয়ে এভাবে করা হলো, তা নিয়ে সাবেক কূটনীতিকরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

বিদেশে বাংলাদেশের ৮২টি মিশনের মধ্যে প্রায় ৭০টি দূতাবাস গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলে। বাকি ১২টি দূতাবাসে ছবি নামানোর নির্দেশ আসে সম্প্রতি, গত ১৫ আগস্ট মৌখিক নির্দেশের মাধ্যমে। ইতোমধ্যেই সবকটি মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি নামানো সম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, "পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু দেশে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে রাষ্ট্রপতির ছবি রাখা হচ্ছে না, তাই বিদেশি মিশন থেকেও সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"

৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন দপ্তরেও একইভাবে ছবি সরানো হয়। তবে এই সিদ্ধান্তে মৌখিক নির্দেশ ব্যবহার করায় সাবেক রাষ্ট্রদূতরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, বিষয়টি আইনিভাবে করা সম্ভব ছিল এবং অযথা জটিলতা তৈরির প্রয়োজন ছিল না।

একজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, "রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শনের বিষয়ে কেবিনেটের একটি সিদ্ধান্ত বিদ্যমান। সেটি যদি পরিবর্তন করতে হতো, তবে নতুন কেবিনেট বৈঠকে সহজেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। কিন্তু এখানে মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার ফলে অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, "গত এক বছরে একাধিকবার উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়েছে। সেখানে চাইলে আইনিভাবে পুরোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নতুন নির্দেশনা জারি করা যেত। সরকার ইচ্ছা করলেই বৈধ প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধান করতে পারতো। কিন্তু মৌখিক নির্দেশ দিয়ে এটি করা হয়েছে, যা অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে।"

রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। তার স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রের মাধ্যমেই রাষ্ট্রদূতরা আইনি বিশেষ ক্ষমতা পান। এখন যদি রাষ্ট্রপতির মর্যাদাকে খাটো করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেটি সরাসরি রাষ্ট্রদূতের ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

একজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, "এক বছর পর হঠাৎ এভাবে মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজন কেন হলো, সেটি রহস্যজনক। যদি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে কারও ছবি প্রদর্শন করা হবে না—তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যে এমন সিদ্ধান্ত হলে রাষ্ট্রদূতদের জন্য তা বিব্রতকর হতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, "দেশের অভ্যন্তরে সচিব কিংবা অন্য কোনো কর্মকর্তার নিয়োগে রাষ্ট্রপতির প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেই। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে পড়ে। ফলে তার মর্যাদা অবমাননা করা হলে রাষ্ট্রদূতদের আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে।"

রাষ্ট্র পরিচালনা মূলত একটি সুসংহত আইনি কাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। নির্বাচন থেকে শুরু করে সরকারি অফিসে কার ছবি প্রদর্শিত হবে—সবই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়ে থাকে।

আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, "এখানে দেখা যাচ্ছে আইনি কাঠামোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আসলে গত বছরের ৫ আগস্টের পরপরই ছবি প্রদর্শন নিয়ে একটি স্পষ্ট সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল। কারণ বিষয়টির প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এক বছর পর মৌখিক নির্দেশ জারি করার ফলে বোঝা যাচ্ছে—আইনি দিকগুলোকে অবহেলা করা হয়েছে।"

এমন পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে আসীন ব্যক্তির ছবি নামানোর মতো সংবেদনশীল বিষয়ে কেন আইনকে পাশ কাটিয়ে মৌখিক নির্দেশের পথ বেছে নেওয়া হলো? বিষয়টি শুধু প্রশাসনিক নয়, বরং রাজনৈতিক ও আইনি ব্যাখ্যারও দাবি রাখে।

Không có bình luận nào được tìm thấy