close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

‘রাজৈনতিক বিভাজন থাকলেও দেশ গড়ার কাজে বিভাজন থাকবে না’

Nahid Islam Somrat avatar   
Nahid Islam Somrat
নাহিদ ইসলাম সম্রাট, জবি প্রতিবেদক

“জুলাই ঘোষণাপত্র: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের ভাবনা” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই..

ঘোষণাপত্র প্রয়োজন কারণ আমাদের মধ্যে একটা আকাঙ্খা তৈরি হয়েছে। মানুষের মধ্যে মিল হয়েছে, আপনি কোন দলের বিষয় না। এটায় জুলাই স্পিরিট। লড়াইটা এখনও শেষ হয়নি। হাতে হাত রেখে লড়াইটা আমাদের শেষ করতে হবে। এই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের। রাজনীতিতে বিভাজন থাকবে কিন্তু দেশ গড়ার কাজে কোনো বিভাজন থাকবে না। সম্মিলিতভাবে দলীয় ও ব্যক্তিগত স্বার্থের উধ্বে উঠে বাংলাদেশ গড়ার প্রশ্নে, বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।’

রোববার (২২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ছাত্র সংগঠনের সমন্বিত সহ-অবস্থান রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। যদিও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তবুও সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্য বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ৫ আগস্ট না ঘটলে আপনি-আমি এখানে থাকতাম না, আপনি-আমি কেউই বেঁচে থাকতাম না। বিপ্লবের লক্ষ্য হলো সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা। এই বিপ্লবের পরিবর্তনটা হলো বাংলাদেশে থেকে ফাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের আমূল পরিবর্তন করা। ইসলাম ফোবিয়া ও ধর্মবিদ্বেষের শিকড় ভেঙে ফেলা। এটা বিপ্লবের দাবি। এই দাবির কারণে, মানুষের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে হাসিনার মত জুলুমশায়ীর পতন হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র ৮৩৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। জাতিসংঘ ফ্যক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বলছে ১৪০০ শহীদ, আমরা বলঠিছ ২০০০ জন। তাহলে বাকি শহীদদের নামের তালিকা এখনো হলো না কেনো। আপনি যদি প্রত্যেকটা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন, কতক্ষণ লাগে শহীদদের তালিকা হতে। সুতরাং বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা ফেইল করেছে। কতক্ষণ লাগে খুনীদের গ্রেফতার করতে, পুলিশ ব্যবস্থা ফেইল করেছে। খুনিরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থা ফেইল করেছে। ’

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘জুলাইয়ের স্বীকৃতি না পেলে আমরা কেউই নিরাপদ নই। শহিদ, আহত ও পঙ্গু হয়ে যাওয়া সকল আন্দোলনকারীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে তাদের যথাযথ মর্যাদা ও স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের উত্থান কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। অবৈধ নির্বাচন, বিচারব্যবস্থার ধ্বংস ও জবাবদিহিহীনতা এর মূলে। তাই একটি জবাবদিহিমূলক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিবাদী শক্তি হয়ে উঠতে না পারে।’

জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ বলেন, ‘জুলাই যে স্মৃতি আমাদের দিয়ে গেছে, হাজারো মানুষের লাশ, অঙ্গহানী, রাষ্ট্র ব্যবস্থার শোষনযন্ত্র হয়ে ওঠার ভয়াবহ উদাহরণ। এই জুলাই আরেকবার আসতে পারে না, আমাদের জনপদে, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আবার আপনার-আমার মতো জীবন ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে দাঁড়াবে এটা হতে পারে না। জুলাইয়ের যে মেসেজ আমরা পেয়েছি বৈষম্যহীন ও ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা যা আমাদের বিভক্ত করবে না, শ্রেণীবৈষম্য তৈরি করবে না, নাগরিক অধিকার কোনোরকম ছল-চাতুরি ছাড়ায় প্রদান করবে, সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা, রাষ্ট্র কাঠামো আমাদের দাঁড় করাতে হবে। সেটার জন্য সবার আগে দরকার জুলাইয়ের এই বার্তার স্বীকৃতি, জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র।’

আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানার সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বিলাল হোসাইন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক এবং ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহিদুল হক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সক্রিয় ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা। তারা সবাই জুলাই বিপ্লবের তাৎপর্য, ভবিষ্যৎ করণীয় ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

 

Không có bình luận nào được tìm thấy