রাজনীতি কোনো ব্যক্তিগত লাভ বা ক্ষমতা অর্জনের হাতিয়ার নয়, বরং এটি একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। রাজনীতি যদি আদর্শ, ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, তবে তা সমাজে সুবিচার, মানবিকতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর মাধ্যম হতে পারে।
কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যখন অর্থনৈতিক স্বার্থ, পদ-পদবির লোভ ও ক্ষমতার অপব্যবহার সাধারণ চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন একজন সৎ ও নীতিবান রাজনীতিকের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সততা কেবল একটি ব্যক্তিগত গুণ নয়, এটি নেতৃত্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একজন সৎ রাজনীতিবিদ কেবল নিজের দলের প্রতিনিধি নন, তিনি পুরো জাতির জন্য আদর্শ। তাঁর কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনকল্যাণের প্রতিশ্রুতি থাকে। ক্ষমতার মোহ নয়, বরং জনগণের কল্যাণই তাঁর মূল লক্ষ্য।
যেখানে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের কারণে সাধারণ মানুষের রাজনীতির ওপর আস্থা হারিয়ে যায়, সেখানে একজন সৎ রাজনীতিবিদের উপস্থিতি সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে। তিনি জাতির নৈতিক ভিতকে শক্তিশালী করেন এবং একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রাখেন।
বিশ্ব ইতিহাসে বহু নেতা রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের সততা, আদর্শ এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতিহাসে অমর হয়েছেন। তাঁদের জীবনের মূলমন্ত্র ছিল জনসেবা, নৈতিকতা ও দৃঢ় নীতিবোধ।
আমাদের দেশের রাজনীতিতেও এখন এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন, যারা আদর্শকে লালন করবে এবং দুর্নীতি, স্বার্থপরতা ও বিভাজনের রাজনীতিকে প্রতিহত করবে। তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে সৎ রাজনীতিতে অংশগ্রহণে।
রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত, প্রার্থী মনোনয়নের সময় শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা বা আর্থিক অবস্থান নয়, বরং প্রার্থীর সততা, জনদায়িত্ববোধ ও নৈতিক অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া।
রাজনীতিতে সৎ মানুষের অংশগ্রহণ শুধু জরুরি নয়, বরং এটি জাতির অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি। একমাত্র সৎ নেতৃত্বই পারে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ।