পূর্বাচলে ছয়টি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি মামলা: শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সাত সদস্য ও রাজউক কর্মকর্তারা অভিযুক্ত..

সুভাষ মজুমদার avatar   
সুভাষ মজুমদার
রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ছয় সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের করা ৬ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।..

ঢাকা, ২০ জুলাই:

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক জোনে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ছয়টি মামলার বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব।

রোববার (২০ জুলাই) এ আদেশ দেওয়া হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন সার্বিক) আমিনুল ইসলাম জানান, মামলাগুলো বিচার উপযোগী হওয়ায় বিশেষ জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক থাকায় তাদের হাজির করতে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়েও আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

দুদকের দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ছয়টি মূল্যবান প্লট নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন, যা বরাদ্দ নীতিমালার পরিপন্থী।

অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন:

ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়

মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল

ছোট বোন শেখ রেহানা

শেখ রেহানার সন্তান টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক (ব্রিটিশ এমপি), রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক।


এছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে রয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞাসহ আরও ১২ জন কর্মকর্তা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।

বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লটের বিস্তারিত:

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কে অবস্থিত প্লটগুলো শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা (প্লট নম্বর ০০৯),

সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫),

সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (প্লট নম্বর ০১৭),

শেখ রেহানা (প্লট নম্বর ০১৩),

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (প্লট নম্বর ০১১),

আজমিনা সিদ্দিক (প্লট নম্বর ০১৯)।


প্রতিটি প্লটের পরিমাণ ১০ কাঠা করে এবং বরাদ্দপত্র ইস্যু ও রেজিস্ট্রির তারিখ অনুযায়ী এটি ২০২২ সালের আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, এসব বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও বিধিবদ্ধ নীতিমালা লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ৪০৯ এবং ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

চলতি বছরের ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করে দুদক, যা এখন বিচারিক কার্যক্রমের জন্য বিশেষ জজ আদালতে প্রেরিত হলো।

لم يتم العثور على تعليقات