মহেশখালী থানার ওসিকে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য ও পৌর কমিটির সাবেক আহবায়ক আকতার হোসেনের সব পদ স্থগিত করেছে দল।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত এই নেতা হলেন আকতার হোসেন, যিনি কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য এবং মহেশখালী পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) উদ্দেশ্য করে আকতার হোসেন অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও সরাসরি হুমকি দেন। পাশাপাশি, তিনি এমন কিছু কার্যকলাপ করেছেন যা সংগঠনের নীতি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় দফতরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক তদন্তে আকতার হোসেনের আচরণ দলীয় স্বার্থ ও ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাই দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।
মহেশখালী ও আশপাশের এলাকায় আকতার হোসেন বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি অতীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন ও কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাটি দলের ভেতরে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে এক রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের জেরে আকতার হোসেন মহেশখালী থানার ওসির সাথে মোবাইল ফোনে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। এসময় তিনি তীব্র ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠে। ঘটনার অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
দলীয় নীতি অনুসারে, বিএনপি সবসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যথাযথ আচরণ ও সংলাপ বজায় রাখার আহ্বান জানায়। কিন্তু আকতার হোসেনের আচরণ সেই নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর ফলে কেবল মহেশখালী নয়, কক্সবাজারের বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এদিকে, পদ হারানো আকতার হোসেন এখনও প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে দলীয় সূত্র বলছে, তিনি ঘটনাটি নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ পাবেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটি তার বক্তব্য বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ বিএনপির ভেতরে শৃঙ্খলা জোরদার করতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, দলের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।