close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পৃথিবীর ঘূর্ণন বেড়েছে, সময় গণনায় পরিবর্তনের চিন্তা বিজ্ঞানীদের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Earth’s rotation is speeding up, prompting scientists to consider removing a second from world time—a move that would be unprecedented.

পৃথিবীর ঘূর্ণন আগের চেয়ে দ্রুত হওয়ায় বিজ্ঞানীরা সময় গণনায় এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার চিন্তা করছেন, যা ইতিহাসে প্রথমবার ঘটতে যাচ্ছে।

পৃথিবী আমাদের চারপাশে ঘুরে চলেছে নিয়মিত ছন্দে। কিন্তু সেই ছন্দেই এবার ব্যতিক্রম ধরা পড়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর ঘূর্ণন আগের চেয়ে দ্রুততর হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তন সময় গণনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, এমনকি সময় থেকে এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে—যা হবে বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।

চলতি বছরের গ্রীষ্মকালে বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, পৃথিবী আগের চেয়ে দ্রুত ঘুরছে। ১০ জুলাই দিনটি ছিল ২০২৫ সালের সবচেয়ে ছোট দিন, যা স্বাভাবিক ২৪ ঘণ্টার দিনের চেয়ে ১.৩৬ মিলিসেকেন্ড কম দীর্ঘ ছিল। এটি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি পরিবর্তিত হচ্ছে, যা সময় গণনার প্রথাগত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে।

বিশ্বের সময় নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন ‘নেগেটিভ লিপ সেকেন্ড’ নামে পরিচিত একটি ধারণা বাস্তবায়নের চিন্তায় আছে। সাধারণত, পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে গেলে সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে অতিরিক্ত এক সেকেন্ড যোগ করা হয়—এটিকে বলা হয় ‘লিপ সেকেন্ড’। ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ বার লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে। তবে এবার ঘটতে যাচ্ছে উল্টোটি—সময়ের ঘাটতি পূরণে এক সেকেন্ড বাদ দিতে হতে পারে।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা শুধু সময় নির্ধারণের ইতিহাসেই নয়, প্রযুক্তিগত দিক থেকেও বিশাল প্রভাব ফেলবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণনগতিতে হঠাৎ এই পরিবর্তন স্যাটেলাইট, জিপিএস, বৈশ্বিক যোগাযোগ ও ব্যাংকিং সিস্টেমের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, এই সমস্ত সিস্টেম নির্ভর করে অত্যন্ত সূক্ষ্ম সময় মাপকাঠির ওপর।

বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণনের পরিবর্তনে বেশ কিছু প্রাকৃতিক ও ভূ-অভ্যন্তরীণ কারণ জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে চাঁদের আকর্ষণ (টিডাল ফোর্স), পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মৌসুমভিত্তিক পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরের তরল কোরের গতি। এসব কারণ সম্মিলিতভাবে পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি প্রভাবিত করে।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যেই এক সেকেন্ড বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার ৪০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ, সময়ের ধারায় মানবসভ্যতা এমন এক নতুন অধ্যায়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে, যেখানে সময়কে আরেকবার নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে হতে পারে।

এই ঘটনাটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা শুধু সময় বিজ্ঞানেই নয়, মানব ইতিহাসেও এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের দিক নির্দেশনা দেবে।

 

コメントがありません