close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে সিজদার মাধ্যমে নির্বাচনের ওহি পেয়েছেন: পাটওয়ারী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
At a discussion in Dhaka, NCP leader Nasiruddin Patwari alleged that the Chief Adviser received election instructions through prostration in London. He emphasized that the only solution to Bangladesh’..

রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে সিজদার মাধ্যমে নির্বাচনের নির্দেশ পেয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংকট সমাধানের একমাত্র পথ গণপরিষদ নির্বাচন।

রাজধানীর বাংলামোটরে আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী শনিবার (১৬ আগস্ট) এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে সিজদা দিয়েছেন এবং সেই সিজদার মাধ্যমেই নির্বাচনের নির্দেশ পেয়েছেন।

পাটওয়ারীর বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আপনার চোখে পড়ে না। আপনি লন্ডনে গিয়ে সিজদা দিয়েছেন। সিজদার মাধ্যমে আদেশ পেয়েছেন এবং সেখানে একটি প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে। তবে কোন সংবিধানের অধীনে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেটি পরিষ্কার নয়। অথচ আপনার সিজদা দেওয়ার স্থান হওয়া উচিত ছিল বাংলাদেশের জনগণের প্রতি।”

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় হলো গণপরিষদ নির্বাচন। এ প্রসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে এবং সেসব দেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও একই ধরনের পথ অনুসরণ করতে হবে।”

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী উল্লেখ করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানও ১৯৭৮ সালের ১৭ এপ্রিল একটি সামরিক ফরমান জারি করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে একটি গণপরিষদ গঠন করা যায় কি না, সেটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। “এটি ছিল একটি গ্যাজেটেড ফরমান, যা দেখায় যে গণপরিষদ নির্বাচন কোনো নতুন ধারণা নয়, বরং জাতীয় ইতিহাসের সাথেই জড়িয়ে আছে,” তিনি যোগ করেন।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, “দেশ যদি স্থিতিশীল হয়, তবে জনগণের জন্য একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। যদি প্রধান উপদেষ্টা তা করতে ব্যর্থ হন, তবে তার বৈধতাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ তিনি বর্তমানে যে সংবিধানের ১০৬ ধারা অনুযায়ী ক্ষমতায় রয়েছেন, সেটি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সরাসরি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণকে ভয় দেখানো হচ্ছে, বলা হচ্ছে তোমাদেরকে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু আমরা তো আগেই মরে গেছি—আর কীভাবে মারবেন? যদি মৃত মানুষকে মারতে চান, তাহলে আপনাকেও কবরে নামতে হবে। আর কবরে নামলে, আপনিও আমাদের মতো পরিণতি ভোগ করবেন।”

পাটওয়ারীর বক্তব্যের শেষাংশ ছিল আরও উত্তেজনাপূর্ণ। তিনি ঘোষণা দেন, “নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ যুদ্ধ আর কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি জনগণের অধিকারের লড়াই। এই যুদ্ধের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান তৈরি হবে। তাই সবাইকে আহ্বান জানাই—এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগ দিন। আমরা এক চুলও পিছপা হব না।”

তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, এনসিপি এখন গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে বড় রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি জনগণকে সরাসরি এই লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাটওয়ারীর এই বক্তব্য শুধু প্রধান উপদেষ্টাকে চাপে ফেলবে না, বরং সামনের দিনের রাজনীতিতেও নতুন ধারা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি ভবিষ্যতে একটি বড় রাজনৈতিক এজেন্ডা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

No comments found