✍️ আশরাফুল আলম
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, যাত্রাবাড়ী
📅 নেত্রকোনা, ৮ আগস্ট ২০২৫
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় অবস্থিত ‘রাজধলা বিল’ আজও অনেকের কাছে অজানা এক রত্ন। অথচ প্রকৃতির অপরূপ রূপ আর জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য মেলবন্ধন গড়ে তুলেছে এই জলাভূমি। বর্ষাকালে রাজধলা বিল পরিণত হয় এক বিশাল জলরাশিতে, যা একদিকে যেমন এলাকার কৃষিজীবী মানুষদের জীবিকার উৎস, তেমনি অন্যদিকে পর্যটকদের কাছে হয়ে উঠছে এক সম্ভাবনাময় গন্তব্য।
স্থানীয়দের মতে, বর্ষাকালে বিলে ছোট বড় নানা জাতের মাছের আধিক্য দেখা যায়। অনেকে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আবার শীতকালে বিলটি শুকিয়ে গিয়ে চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়, তখন সেখানে বোরো ধানসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ করা হয়। অর্থাৎ সারা বছরই রাজধলা বিল ঘিরে চলে মানুষের জীবনযাত্রা।
তবে শুধু জীবিকা নয়, এই বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও চোখে পড়ার মতো। বর্ষার জলে ভেসে থাকা কচুরিপানা, মাঝেমধ্যে উড়ে যাওয়া পাখির ঝাঁক, আর নির্জন জলের বুকে নৌকার চলাচল—সব মিলে এক মোহময় পরিবেশ সৃষ্টি করে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন, পিকনিক করেন এবং স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেন।
স্থানীয় শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, “এই বিল যদি একটু পরিচর্যা পেত, তবে পর্যটন শিল্পে এটি নেত্রকোনার একটি আইকন হয়ে উঠতে পারত।”
❖ সমস্যাও আছে কিছু:
বিলের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অপরিকল্পিতভাবে মাছ ধরা ও জলজ উদ্ভিদের সংকট অনেক সময় পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়াও পর্যটন অবকাঠামোর অভাবও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বাধা সৃষ্টি করছে।
❖ সম্ভাবনা:
প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ। একটি পরিকল্পিত পর্যটন এলাকা হিসেবে রাজধলা বিল গড়ে উঠতে পারে—যেখানে থাকবে নৌকা ভ্রমণ, পাখি পর্যবেক্ষণ, স্থানীয় খাবার, ও প্রাকৃতিক রাত্রিযাপন ব্যবস্থা।
রাজধলা বিল শুধু একটি প্রাকৃতিক জলাধার নয়, এটি নেত্রকোনার মাটি ও মানুষের সঙ্গে জড়িত এক জীবনচিত্র। যথাযথ উদ্যোগে এটি হতে পারে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কেন্দ্রস্থল।