নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় এক তরুণী পোশাকশ্রমিকের ওপর নির্মম যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা পূর্বপরিচিত এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তরুণী কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে একটি নির্জন স্থানে তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক। এরপর তাকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, "আমরা প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।"
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নারী অধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে। এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
একজন মানবাধিকার কর্মী বলেন, "এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা বিচার পান না। এ কারণে অপরাধীরা বারবার এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পায়।"
বাংলাদেশ সরকার নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা শাস্তি এড়িয়ে যাচ্ছে।
একজন আইনজীবী বলেন, "এই ধরনের মামলাগুলোতে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পান এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।"
নরসিংদীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের এই মর্মান্তিক ঘটনা আবারও নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনেছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে এ ধরনের ঘটনা রোধ করা কঠিন হবে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া জরুরি।
