close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

পিএসজি'কে মাটিতে নামিয়ে শিরোপা নিয়ে গেলো চেলসি

Mehedi Hasan avatar   
Mehedi Hasan
আকাশে ওড়ার পথে ছিল পিএসজি। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে এসে সেই উড়াল থামিয়ে দিল চেলসি। উসমান দেম্বেলেদের দলকে মাটিতে নামিয়ে ৩-০ গোলের দুর্দান্ত জয়ে ইতিহাস গড়ল ইংলিশ ক্লাবটি..

নতুন ফরম্যাটে আয়োজিত ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লিখিয়েছে চেলসি। ২০২১ সালে আগের ফরম্যাটে শিরোপা জিতেছিল তারা, চার বছর পর আবারও বিশ্বসেরার মুকুট উঠল ব্লুজদের মাথায়।

ম্যাচের আগে চেলসির কোচ এনজো মারেসকা বলেছিলেন, “ফুটবলকে আমি দাবা খেলার মতো দেখি। প্রতিপক্ষ যখন মুভ করবে, তখন পাল্টা কিছু দিতে হবে। ফাইনালটাও হবে দাবার মতো।” মাঠে গিয়েও যেন ঠিক সেভাবেই কিস্তিমাত করল তার দল। পিএসজি বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোলের খাতায় কিছুই লিখতে পারল না। ইংলিশ ক্লাব চেলসির কার্যকর ফুটবলই শেষ হাসি হাসাল।

প্রথমার্ধেই সব কিছু শেষ করে দেয় চেলসি। ম্যাচের ২২তম মিনিটে প্রথম গোলটি করেন তরুণ ইংলিশ তারকা কোল পালমার। গোলকিপার রবার্ট সানচেজের লম্বা বল থেকে বিল্ড আপ শুরু হয়, ডান দিক থেকে মালো গুস্তোর ক্রসে শট নেওয়ার পর বলটি প্রতিহত হলেও ছুটে এসে জালে পাঠান পালমার। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই আরও ছন্দে ওঠে চেলসি। ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পালমারই। মাঝমাঠে পিএসজির ভুল থেকে বল পেয়ে দ্রুত আক্রমণে উঠে একজনকে কাটিয়ে চোখ ধাঁধানো টার্নে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি।

৪৩ মিনিটে চেলসির তৃতীয় গোলটি করেন জোয়াও পেদ্রো। মাঝমাঠে বল পেয়ে পালমার তখন একদম অরক্ষিত, তার পাস থেকেই ১০ গজ দূর থেকে অসাধারণ ক্লিপস শটে দোন্নারুমার মাথার ওপর দিয়ে জালে বল পাঠান পেদ্রো। প্রথমার্ধেই ৩-০ তে এগিয়ে যায় চেলসি। পিএসজির রক্ষণ ভাঙতে এই একটাই অর্ধই যথেষ্ট ছিল তাদের জন্য।

পিএসজি গোলের উদ্দেশে প্রথম শট নেয় ম্যাচের ১৯তম মিনিটে। এবারের টুর্নামেন্টে কোনো দল এত দেরিতে প্রথম শট নেয়নি। বল দখলের দিক থেকে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও তাদের আক্রমণ ছিল নিষ্প্রভ। বরং চেলসির জমাট রক্ষণ ও দুর্দান্ত গোলরক্ষক সানচেজ প্রতিপক্ষকে ছায়া হয়ে ঘিরে রাখে। ৫৩ মিনিটে দেম্বেলের ছয় গজ দূর থেকে নেওয়া এক শট দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন সানচেজ। বিবিসি বলেছে, “ওয়ার্ল্ড টাইটেল উইনিং সেভ”—এই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টগুলোর একটি।

৮৫ মিনিটে জোয়াও নেভাস লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। এরপর কোনোভাবেই আর ফিরে আসতে পারেনি তারা। পিএসজির দারুণ রক্ষণ এই টুর্নামেন্টে ছিল আলোচিত। রিয়াল, আতলেতিকো, মায়ামি ও বায়ার্নের বিপক্ষে ৪-০ করে জিতেছিল তারা। কিন্তু ফাইনালের ৩০ মিনিটেই তাদের জালে দুইবার বল জড়ায় চেলসি। পুরো টুর্নামেন্টে পিএসজি যেখানে মাত্র একটি গোল হজম করেছিল, ফাইনালে এসে তাদের জাল কেঁপেছে তিনবার!

চেলসির অভিযানটাও ছিল নাটকীয়। গ্রুপ পর্বে তারা হেরে গিয়েছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গোর কাছে ৩-১ গোলে। কিন্তু সেই হার থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় তারা। বেনফিকাকে ৪-১, পালমেইরাসকে ২-১ ও ফ্লুমিনেন্সকে ২-০ গোলে হারিয়ে উঠে আসে ফাইনালে। প্রতিটি ধাপে আরও ধারালো হয়েছে ইংলিশ জায়ান্টরা। আর ফাইনালে এসে যেন খেলল নিজেদের সেরা ম্যাচটাই।

চেলসির নায়ক ছিলেন কোল পালমার। দুইটি গোল করার পাশাপাশি জোয়াও পেদ্রোর গোলেও তার অ্যাসিস্ট। মাঠজুড়ে তার উপস্থিতি ছিল দুর্দান্ত। এমন ফাইনাল পারফরম্যান্সই তার নামটি এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে জুড়ে দিল স্থায়ীভাবে। যদিও ম্যাচের ৬৭ মিনিটে জোয়াও পেদ্রোকে তুলে নেন কোচ মারেসকা। এতে গোল্ডেন বুট জেতার স্বপ্নটা পেদ্রোর জন্য আর পূরণ হয়নি। তবে দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সেই আক্ষেপ হয়তো খুব একটা টিকবে না।

নতুন ফরম্যাটে নতুন রোমাঞ্চের নাম ক্লাব বিশ্বকাপ। আর এই নতুন ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন এখন চেলসি। 

Inga kommentarer hittades