পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশবাসী, ঢাকা মহানগরবাসী এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
এক যৌথ শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন, “পশু কুরবানিকে আল্লাহ ওয়াজিব করেছেন এবং দ্বীন কায়েমের জন্য জান ও মাল কুরবানিকে ফরজ করেছেন। ঈদুল আযহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে ত্যাগ ও কুরবানির অনন্য আদর্শ নিয়ে। এ উৎসব কেবল একটি ধর্মীয় অনুশ্ঠান নয়, বরং এটি মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধনকে দৃঢ়তর করে।”
তারা বলেন, হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর রাহে ত্যাগের যে মহাপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, সেটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর আদর্শ স্মরণ করে কিয়ামত পর্যন্ত কুরবানির বিধান পালন করা মুসলিম জাতির জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে, যাতে তারা নিজেদের প্রিয় বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “কুরবানির শিক্ষা হলো নিজের অহংবোধ বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর বিধি-বিধান মেনে তাকওয়ার পথে অগ্রসর হওয়া। যেমনিভাবে পশু কুরবানি আল্লাহর নির্দেশ, তেমনি ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান প্রতিষ্ঠাও আমাদের দায়িত্ব। ইসলামের পরিপূর্ণতা শুধু নামাজ-রোজা-হজ-যাকাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এতে রয়েছে রাজনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা—জীবনের প্রতিটি দিক। ইকামতে দ্বীন মানে ইসলামী আদর্শে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন।”
তারা বলেন, বর্তমানে দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে। আওয়ামী শাসনের পতনের পর মানুষ নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন সকল মত ও পথের ঐক্য। নেতৃবৃন্দ বলেন, “শুধু নির্বাচন নয়, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে দরকার গণতান্ত্রিক সংস্কার, ইনসাফভিত্তিক সমাজ, এবং অতীতের গণহত্যার বিচার। নইলে আরও ভয়াবহ দমননীতি ও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে পারে।”
নেতৃবৃন্দ সকল রাজনৈতিক দল ও মতের প্রতি জনগণের অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “কুরআনের ভাষায়, ‘বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ কেবল আল্লাহরই জন্য।’ তাই ঈদুল আযহার প্রকৃত শিক্ষা হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করা।”
তারা নগরবাসীসহ দেশবাসীকে ঈদের দিনে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুরবানি সম্পন্ন করা এবং ঈদের প্রকৃত তাৎপর্য অনুধাবন করে উদযাপন করার আহ্বান জানান।
পরিশেষে নেতৃবৃন্দ আবারো পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানান এবং হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে শোষণমুক্ত, ইনসাফভিত্তিক ও তাকওয়ার সমাজ গঠনে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।