close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

পাওনা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন

রতন হোসেন avatar   
রতন হোসেন
****

সাভার: শিল্পাঞ্চল সাভার ও গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া ডার্ড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীর বকেয়া পাওনা পরিশোধের চুক্তি ভঙ্গের দায়ে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও পাওনা পরিশোধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। পরে শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগীরা।

 

বুধবার (১৪ মে) দুপুরে টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কাস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

 

এ সময় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া ইসলাম, গাজীপুর মহানগরের সভাপতি শফিউল আলম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা মিজানুর রহমান শিকদার, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের হারুন সরকার, ডার্ড গ্রুপের শ্রমিক আলাউদ্দিন, আলী আকবর, সুবিমল ঘোষ, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

 

সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর অবস্থিত ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড, সাভারের ডার্ড গ্রুপের’ দীপ্ত এ্যাপারেলস লিমিটেড” দীপ্ত গার্মেন্টস লিমিটেড” ডার্ড ওয়াশিং প্লান্ট লিমিটেড” ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড” সহ ডার্ড গ্রুপের মোট ৫ টি কারখানা ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর বেআইনিভাবে বন্ধ ঘোষণা করে” বিগত সরকারের আমলে ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিক অসন্তোস নিরসনে একটি সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী পাওনা পরিশোধের কথা থাকলেও ৫০% সুবিধা দিয়ে সমঝোতা ভিত্তিতে শ্রমিক-কর্মচারীগণ চুক্তি মেনে নিলেও সেই চুক্তি ১৮ মাসেও বাস্তবায়ন করেনি মালিকপক্ষ।

 

পরবর্তীতে একাধিক বার সমঝোতা বৈঠক হওয়ার পরেও মালিকপক্ষ একের পর এক চুক্তি ভঙ্গ করেই চলছে এতে করে শ্রমিক-কর্মচারীদের আইনানুগ পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক আকারে অসন্তোষ তৈরি হলে ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর ডার্ড গ্রুপের বিদ্যমান শ্রম পরিস্থিত সংক্রান্ত পর্যালোচনা মুলক সভা অনুষ্ঠিত হয় উক্ত সভার কার্যবিবরণীতে মালিকপক্ষ ২৭ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করেন কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী পাওনার পরিমাণ অনেক বেশি।

 

২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর ১৩ টাকা আনুপাতিক হারে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা বাবদ পরিশোধের কথা বলা হয় কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ১৩ টাকার আংশিক পাওনা পরিশোধ করে মালিকপক্ষ” কিন্তু রেশিও অনুপাতে পাওনা পরিশোধ না করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি করা হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। উক্ত বিষয়ে ইতিপুর্বে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি ডার্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাবিল উদ দৌলা বর্তমানে থাইল্যান্ডে আছেন এবং উক্ত কারখানার পরিচালক (অর্থ:) সেজুতি ম্যাডাম বাংলাদেশে অবস্থান করছেন শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে মালিকসহ পরিবার বহাল তবিরতে জীবন যাপন করছে।

 

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সর্বশেষ গত ২২ এপ্রিল সকল পাওনা পরিশোধের দাবিতে শ্রম ভবনের সামনে নারী শ্রমিকসহ রাত্রি যাপন করলে ২৩ এপ্রিল ডার্ড গ্রুপ সহ মোট ৬টি প্রতিষ্ঠানের শ্রম অসন্তোষ নিরসনে অন্তর্বতীকালীন সরকারের শ্রম উপদেষ্টা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ৪ জন উপদেষ্টাসহ অংশীজনদের নিয়ে সভায় বসে আলাপ আলোচনা শেষে প্রেস/মিডিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের জানান যে ৭ মে এর মধ্যে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করার নির্দেশ দেন একই সাথে পালিয়ে থাকা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারি করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায়।

 

কিন্তু মালিকপক্ষ এবারের নির্দেশনাও ভঙ্গ করছে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি জানান। অপরদিকে সাভার-গাজীপুরে শ্রমিকদের নামে হয়রানিমুলক এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র হিসাবে ২ মামলা দায়ের করেছে। শ্রমিকদের গ্রামের বাড়িতে গ্রেপ্তারের জন্য খুজছে এবং হয়রানি করতেছে।

 

অন্যদিকে ২ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আদালতের রায়/আদেশ কার্যকর না করায় বাদীপক্ষ ফৌজদারী মামলা করলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি” এমতবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজমান যেকোন মুহুর্তে ফুসে উঠতে পারে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩৬ ধারার ক্ষমতা বলে মালিকের সম্পত্তি ক্রোক করে পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানান পাওনাকৃত শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তারা।

 

নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ১৯ মে এর মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে ২০ মে হতে অনিদৃষ্টকালের জন্য শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী করার ঘোষণা দেয়।

Inga kommentarer hittades