রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৭ জন নিহত ও শতাধিক আহত। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন ও দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন কলেজের ক্যাম্পাসে সোমবার দুপুর ১টার কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত বিমানের ধাক্কায় ভবনের ওপর আগুন ধরে গেলে ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীসহ অনেকেই হতাহতের সম্মুখীন হন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের প্রাণহানি নিশ্চিত হওয়ায় গোটা দেশ শোকস্তব্ধ হয়ে উঠেছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক, যারা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা সহযোগিতায় অংশ নেন। আহতদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এই দুর্ঘটনার ফলে কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বিপুল মানবিক ক্ষতি হয়েছে, যা জাতিকে গভীর শোকে ডুবিয়ে দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার রাতেই প্রধান উপদেষ্টা পরিষদের প্রেস উইং ঘোষণা দেয়, যে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দেশের সর্বত্র রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে।
রাষ্ট্রীয় শোকের এই দিনে দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। তাছাড়া, দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হবে, যাতে নিহতদের আত্মার শান্তি লাভ হয় এবং আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। বিমান বাহিনী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে থেকে তদন্ত পরিচালনা করছে। আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজ তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
একমাত্র শোকাবহ মুহূর্তে দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ একজোট হয়ে নিহত ও আহতদের জন্য প্রার্থনা করছেন এবং পুনরায় এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সর্বাত্মক সচেতনতা ও প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন।
রাজধানীর উত্তরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি শুধু একটি মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং আমাদের সবার জন্য সতর্কবার্তা যে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব কতটা জরুরি।
এই দুর্ঘটনার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক পালন ও দেশব্যাপী বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান যেন আমাদের জাতির একতা ও মমত্ববোধকে আরও দৃঢ় করে।