দেশব্যাপী অনলাইন জুয়ার অস্বাভাবিক বিস্তারের প্রেক্ষাপটে হস্তক্ষেপ করেছে দেশের উচ্চ আদালত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় হাইকোর্ট একটি উচ্চ পর্যায়ের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।
রোববার বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। কমিটিতে স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আদালত জানতে চেয়েছে, অনলাইন জুয়া বন্ধে এতদিন উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করা হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী মাহিন এম রহমান সাংবাদিকদের জানান, "অনলাইন জুয়ার বিস্তার রোধ ও সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।"
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ রয়েছে, জনপ্রিয়তার জন্য খেলোয়াড়, মডেল ও অভিনেতাদের ব্যবহার করে এসব সাইটের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, অনলাইন জুয়ার আসক্তি থেকে অনেকেই আর্থিক সংকটে পড়ছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে আত্মহননের মতো ঘটনাও ঘটছে। পাশাপাশি, জুয়ার মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগও আদালতের নজরে আনা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, “গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত তরুণ সমাজ অনলাইন জুয়ার মারাত্মক আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি।”
অন্যদিকে, আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, "অনলাইন জুয়ার প্রবণতা বাড়লেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়।"
উল্লেখ্য, ১৮৬৭ সালের পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট অনুযায়ী দেশে জুয়া নিষিদ্ধ। সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদেও জুয়া ও গণিকাবৃত্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
		
				
			


















