পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জসিম তালুকদারের অফিসে বসে ইয়াবা সেবনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে। তিনি নিজেই সেবনের কথা স্বীকার করেছেন।
পিরোজপুরের নেছারাবাদে আপাত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. জসিম তালুকদারের বিরুদ্ধে অফিসে বসে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর এই সেবনের ছবি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং মুহূর্তেই হাজারো মানুষ সেটি স্ক্রিনশট করে রাখে।
ছবিটি প্রথমে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন আফনান মারুফ, যিনি স্বরূপকাঠি পৌর ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক। পরে পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. রেজাউল হাসান সুজন ছবিটি শেয়ার করেন। এই ঘটনার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে স্থানীয় রাজনীতিতে।
মো. জসিম তালুকদার নেছারাবাদ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি রাহুতকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি আগে কখনো ইয়াবা সেবন করি নি। ছয়-সাত মাস আগে দলীয় অফিসে কয়েকজন সেবন করছিল। বন্ধুরা আমাকে প্ররোচিত করে দুই টান দিয়েছিল। হয়তো কেউ সেদিন গোপনে ছবি তুলেছিল। এখন কৌশলগতভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
উপজেলার ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা ছবিটি নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গেলে সেটির স্ক্রিনশট সংগ্রহ করেন অনেকে। বিষয়টি স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এ ঘটনায় স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী কামাল হোসেন বলেন, “যারা ইয়াবা সেবন করছে, তারাই ইয়াবার ব্যবসা করছে। দলের ভেতরে কোনো মাদক, সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজ থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর স্থানীয় সমাজ ও রাজনৈতিক মহল সরব হয়ে পড়েছে। নেটিজেনরা ছবিটি শেয়ার করে নানামুখী প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক নেতাদের এমন কর্মকাণ্ড দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই ছবিটি স্থানীয় নির্বাচন এবং দলের ইমেজের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। নেতাদের দায়িত্বশীল আচরণ এবং স্বচ্ছতার অভাব সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা হ্রাস করতে পারে।
পিরোজপুর জেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলায় এই ঘটনায় সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে নজর দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসন এবং দলীয় শৃঙ্খলা কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ভবিষ্যতে প্রমাণিত হলে দলীয় শৃঙ্খলার আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতা ও প্রশাসকরা।