close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর যুদ্ধবিরতি আলোচনা, গাজায় শান্তির সম্ভাবনা কি জাগছে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Israeli PM Netanyahu reaches Washington to meet Trump, sparking global speculation about a possible Gaza ceasefire. But will Hamas remain the roadblock?

ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় গাজা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে আলোড়ন। তবে হামাস ইস্যুতে সমঝোতা কি আদৌ সম্ভব?

 

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফরে এখন ওয়াশিংটনে। এই সফরকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম হয়েছে, কারণ বিশ্লেষকদের মতে—এই সফরেই গাজা নিয়ে নতুন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার আলোচনাকে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সম্ভাব্য অবসান।

নেতানিয়াহুর এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক সংঘর্ষ নতুন মাত্রা নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার একটি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক’ হতে যাচ্ছে এবং তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে এই সপ্তাহেই একটি কার্যকর চুক্তি হতে পারে।

নেতানিয়াহু বিমানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন একটি চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি যা আমাদের নিরাপত্তা ও শর্ত অনুযায়ী হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা নিঃসন্দেহে কাঙ্ক্ষিত শান্তির পথে বড় অগ্রগতি আনবে।

অন্যদিকে, স্থানীয় সময় ৬ জুলাই, রবিবার সন্ধ্যায় কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আবারো পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আলোচনায় মূল এজেন্ডা হিসেবে থাকছে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তির মার্কিন প্রস্তাব। তবে বারবার চুক্তি আটকে যাওয়ার যে কারণগুলো ছিল, সেগুলোর সমাধান এইবার আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সংশয়।

নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “হামাস ক্ষমতায় থাকলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে না।” তিনি ইঙ্গিত করেছেন, গাজায় শান্তি চাইলে, হামাসের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব সরিয়ে ফেলতে হবে।

হামাসের সামরিক শক্তি আবারও বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা। বর্তমানে এই গোষ্ঠীর যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। নেতানিয়াহু এবং তার সামরিক জোট এ বিষয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন।

এই সফর নেতানিয়াহুর তৃতীয় মার্কিন সফর হলেও এটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ ইরানের পরমাণু স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলার পর এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার সরাসরি আলোচনা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর গাজায় যুদ্ধবিরতি একটি ‘বাস্তব’ বিকল্প হয়ে উঠেছে।

নেতানিয়াহুর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই সফরের বড় প্রভাব রয়েছে। ইরান হামলায় দেশজুড়ে সমর্থন পেয়ে তিনি এখন তার রাজনীতির সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। যদিও তার জোটসঙ্গীরা গাজা পুরোপুরি দখলে রাখার পক্ষে, তবুও বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহু সম্ভবত এই পর্যায়ে এসে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য প্রস্তুত।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অন্যান্য কৌশলগত অগ্রাধিকারে মনোযোগ দিতে চায়—যেমন ইসরাইল-সিরিয়া সীমান্ত স্থিতিশীল করা, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং ইরানের সঙ্গে পুনরায় পরমাণু চুক্তির আলোচনায় ফেরা।

সব মিলিয়ে ওয়াশিংটন সফরটি শুধু ইসরাইল বা গাজার জন্য নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি বড় মোড় ঘোরানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

Комментариев нет