নতুন আইন কোনোভাবেই প্রেস ফ্রিডমে হস্তক্ষেপ করবে না , প্রেস সচিব..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রেস সচিব জানালেন, নতুন আইন কোনোভাবেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না। ভয়-ভীতি ও হুমকির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে নিরাপদ সাংবাদিকতা নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য।..

বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত গণমাধ্যম সংস্কার প্রতিবেদন পর্যালোচনা শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি বলেন, নতুন সাইবার আইনটি কোনোভাবেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না, বরং সাংবাদিকদের জন্য একটি ভয়ডরহীন ও মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতেই এর উদ্দেশ্য।

শফিকুল আলম বলেন, একসময় সাংবাদিকতা ছিল সম্পূর্ণভাবে সরকার নিয়ন্ত্রিত। তবে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এখন একটি স্বাধীন, দায়িত্বশীল এবং নিরাপদ সাংবাদিকতা পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইছি। সরকার চায় না যে, কোনো সিক্রেট এজেন্সি সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করুক। এই সংস্কৃতি বদলানোর জন্যই আমরা নতুন আইন প্রণয়ন করেছি।

তিনি আরও বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করে নতুন যে আইনটি এসেছে, সেটির মাধ্যমে সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় কোনো বাঁধা সৃষ্টি হবে না। ভুল সংবাদ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এখন বিকল্প উপায় রাখা হয়েছে— হুমকি বা গুম নয়।

প্রেস সচিব আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মানেই মিথ্যা বলার লাইসেন্স নয়। স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব—এই দুইয়ের সমন্বয় ছাড়া সত্যিকারের গণমাধ্যমের বিকাশ সম্ভব নয়।

তিনি জানান, গত ১৫ বছরে যারা সাংবাদিক হিসেবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতিবাদ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। জাতিসংঘকে আমরা অনুরোধ করেছি, তারা যেন বাইরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ওই সময়ের সাংবাদিকতার মূল্যায়ন করে। এটি আন্তর্জাতিক মানের একটি নিরপেক্ষ মূল্যায়ন হবে, বলেন তিনি।

এসময় তিনি টেলিভিশন সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার দিকেও ইঙ্গিত করেন। “ওয়েজ বোর্ড নিয়ে জটিলতা না বাড়িয়ে বিকল্প পথে একটি যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাতে হবে। প্রতিটি মিডিয়া হাউজের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া নীতিমালা থাকা প্রয়োজন, কারণ এখন সাংবাদিকতা শুধু প্রিন্ট বা টিভিতে সীমাবদ্ধ নেই, যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য ফাহিম আহমেদ ও অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন।
ফাহিম আহমেদ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যেসব সুপারিশ দিয়েছি, অন্তত কিছু প্রস্তাব যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হয়। এটি কেবল সাংবাদিকদের জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য জরুরি।

অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, ভালোমানের একটি নির্বাচন আয়োজন করতে হলে গণমাধ্যমকে পাশ কাটিয়ে তা সম্ভব নয়। একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই এই খাতকে শক্তিশালী করতেই হবে।

সেমিনারটি নানা দিক থেকে ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এতে উঠে আসে বাংলাদেশের বর্তমান গণমাধ্যম পরিস্থিতি, আইনি কাঠামো, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, এবং সরকারের অঙ্গীকারের বাস্তবতা।
সরকার যে সাংবাদিকদের সুরক্ষা এবং প্রেস ফ্রিডম বজায় রাখার ব্যাপারে এখন অনেক বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল — এই বার্তাই উঠে এসেছে আজকের সেমিনারে। নতুন আইনটি বাস্তবে কেমন কার্যকর হয় এবং সাংবাদিকরা কতটা মুক্তভাবে তাদের কাজ করতে পারেন, সেটাই এখন সময়ের পরীক্ষায় পরিণত।

Ingen kommentarer fundet