নওগাঁ শহরের রাজপথ কাঁপাল ছাত্রদল। বিক্ষোভে উঠেছে সাহসী স্লোগান—‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার।’ সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো শহর।
নওগাঁ শহরে ছাত্রদলের বজ্রগর্জন: ‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার!
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁ শহরের রাজপথে এক ভিন্নমাত্রার দৃশ্য দেখা যায়। গণতন্ত্রের দাবিতে মুখর হয়ে ওঠে শত শত কণ্ঠ। জেলা ছাত্রদলের ডাকে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল যেন একটি গর্জে ওঠা গণজাগরণে রূপ নেয়।
‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার, ‘স্বৈরাচার আর রাজাকার, মিলেমিশে একাকার’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘মানুষ মরে উল্লাস করে, ইন্টারিম কী করে’—এমন অগ্নিঝরা স্লোগানে নওগাঁ শহরের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। রাজপথে ফুটে ওঠে ছাত্রসমাজের ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ভাষা।
এই বিক্ষোভ মিছিলের সূচনা হয় পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে। পরে এটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে গিয়ে শেষ হয় কেডির মোড়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন, এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মামুন বিন ইসলাম দোহা। বক্তারা বলেন, "৯ জুলাই রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্য দিবালোকে যেভাবে ছাত্রদল নেতা সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে এবং তারপর তা নিয়ে উল্লাস করা হয়েছে—তা ঘৃণ্য, পাশবিক এবং মানবতাবিরোধী।
তারা আরও বলেন, “আমরা এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে সোহাগ হত্যার বিচার দাবি করি। বিচার না হলে ছাত্রদল রাজপথ ছাড়বে না। প্রয়োজনে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ছাত্রদল নেতারা সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “দেশে একটি গোপন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, মব তৈরি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে সরকার যদি নীরব থাকে, তাহলে এর দায়ও তাদেরকেই নিতে হবে।
এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিয় কুমার সরকার, ছাত্রনেতা আবু সালেহ স্নেহ, ফায়সাল আজম অলি, হাফিজুর রহমান আকাশ, আজিজুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম তাজ, মনোয়ার হোসেন রাঙ্গা, শাজাহান বাদশা, আল-আমিন বাদশা, হৃদয় মাহমুদ, মুন, সঞ্জীব প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ছাত্রনেতারা আবারও স্লোগান দেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থামবে না।” তারা বলেন, ছাত্রদল শহরে শহরে, গ্রামে গ্রামে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধু নওগাঁ নয়, পুরো ছাত্রসমাজের এক জেগে ওঠার প্রতীক হয়ে উঠেছে। জনগণের মৌলিক অধিকার, বিচার এবং ন্যায়ের দাবিতে ছাত্রদলের এই প্রতিবাদ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে।