নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রতিবাদে শ্যামনগরে জামায়াতের মানববন্ধন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নির্বাচন কমিশনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর মানববন্ধন কর্মসূচ..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অনুষ্ঠিত হলো নির্বাচন কমিশনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ মানববন্ধন কর্মসূচি। শনিবার (২ আগস্ট, ২০২৫) সকাল সাড়ে ১০টায় শ্যামনগর চৌরাস্তা মোড়ে আয়োজিত এই মানববন্ধনটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর রহমান এর নেতৃত্ব দেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম।

উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নায়েবে আমির মাওলানা মইনুদ্দিন মাহমুদ, সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার রেজাউল ইসলাম, প্রভাষক আব্দুল হামিদ, মাওলানা আমিনুর রহমান এবং সমাজকল্যাণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত নেতাকর্মীরাও এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, "আসন পুনর্বিন্যাসের নামে শ্যামনগর এবং আশাশুনিকে একত্র করে একক আসন গঠন করা চরম অযৌক্তিক। এই দুই উপজেলা ভৌগোলিকভাবে ভিন্ন এবং জলবায়ু দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। যেখানে মানুষের জীবন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি— শ্যামনগরকে পূর্বের মতো একটি পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় আসন হিসেবে পুনর্বহাল করা হোক। অন্যথায় শ্যামনগর ও কালিগঞ্জকে একত্র করে আলাদা আসন গঠন করতে হবে। জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে খসড়া গেজেট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।"

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবদুর রহমান বলেন, "বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলা শ্যামনগর। অথচ এই জনবহুল ও জলবেষ্টিত অঞ্চলের মানুষকে একটি পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় আসনের প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটি জনগণের রাজনৈতিক অধিকার হরণ। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সাতক্ষীরার পাঁচটি পুরোনো আসন পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।"

মানববন্ধনে শতাধিক নেতাকর্মী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, "নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিন্যাসে জনগণের মতামত নেওয়া হয়নি। এতে স্থানীয় জনগণের চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আমরা খসড়া গেজেট বাতিল করে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানাই।"

বক্তারা ঘোষণা দেন, খসড়া গেজেট প্রত্যাহার এবং পূর্বের আসন বিন্যাস পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে তারা গণসংযোগ, স্বাক্ষর সংগ্রহসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এই আন্দোলনটি কেবল শ্যামনগরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সাতক্ষীরার অন্যান্য উপজেলায়ও সম্প্রসারিত হবে। স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের কর্মসূচি ভবিষ্যতে স্থানীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

Nema komentara