প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানালেন, ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচনে জেতা সম্ভব নয়। আগামী সপ্তাহেই নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হতে পারে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন এখন পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি শনিবার সকালে রাজশাহীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান। সিইসি স্পষ্টভাবে বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচনে জেতার কোনো সুযোগ নেই— কারণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া হবে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এবং প্রযুক্তি নির্ভর।
তিনি জানান, আগামী সপ্তাহেই ঘোষিত হতে পারে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ। এ রোডম্যাপের মধ্যেই প্রতিটি ধাপের সময়সূচি, ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি, পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম এবং প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সিইসি আরও বলেন, ডিজিটাল যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর অপব্যবহার নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হবে একটি বিশেষ সচেতনতা ক্যাম্পেইন, যাতে ভোটারদের ভুয়া খবর, মিথ্যা প্রচারণা ও বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করা যায়।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণই হবে সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি আশ্বাস দেন, জনগণ যাতে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সে বিষয়ে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে যেন কোনোভাবে কেন্দ্র দখল বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটতে না পারে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এতে নতুন ভোটার যুক্ত করা, মৃত ভোটার অপসারণ এবং তথ্য হালনাগাদ করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আপডেটেড এই তালিকা একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের ভিত্তি তৈরি করবে।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন কোনো দল বা গোষ্ঠীর জন্য কাজ করছে না। জনগণের আস্থা অর্জন করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য সকল প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
রাজশাহীতে উপস্থিত স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারাও জানান, মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। ভোটকেন্দ্রের অবস্থান চূড়ান্ত করা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা—সব কিছুই ধাপে ধাপে সাজানো হচ্ছে।
সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের এ ঘোষণা সাধারণ মানুষের মনে কিছুটা স্বস্তি জাগিয়েছে। তবে জনগণ এখনো অপেক্ষা করছে, আসন্ন নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে, এবং সবার আস্থা অর্জন করতে পারবে কিনা তা দেখার জন্য।