close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Chief Adviser Dr. Muhammad Yunus told CNA that holding an election without legitimacy is meaningless. He pledged to ensure a free and fair election, saying the reform process is nearly complete.

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিএনএ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বৈধতা ছাড়া কোনো নির্বাচনের আয়োজন অর্থহীন। তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সংস্কার কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট করে বলেছেন, “নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই।” সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএ-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ গতি নিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এটি হবে দেশের ইতিহাসে এক বিশেষ নির্বাচন, যা ঘটবে সহিংস বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের এক বছরেরও বেশি সময় পর।

ড. ইউনূস, যিনি এই সংস্কারের তত্ত্বাবধান করছেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রদানের। তার ভাষায়, “আমার কাজ হলো গ্রহণযোগ্য, পরিচ্ছন্ন এবং আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা। আমরা আমাদের লক্ষ্যগুলোর কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যে জালিয়াতি, অপব্যবহার এবং দুর্নীতির সংস্কৃতি ছিল, তা সংস্কার করতেই দীর্ঘ সময় লেগেছে।”

গত জুলাইয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলন ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়। নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই বিদ্রোহের ফলেই হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়, যা ছিল স্বৈরতন্ত্র, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে কলঙ্কিত।

অগাস্টে হাসিনা প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে, যেখানে অভিযোগ রয়েছে যে, তার নির্দেশে দমন অভিযানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাকে ফেরত চাইলেও দিল্লি কোনো সাড়া দেয়নি।

ঢাকা নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেছে, হাসিনাকে যেন অনলাইনে উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানোর সুযোগ না দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেছেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আমরা চাই না, তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালান।

হাসিনার আমলে বাংলাদেশ ভারতের ওপর কৌশলগত ও অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ঢাকা এখন আঞ্চলিক জোট পুনর্গঠন করছে এবং বিকল্প বাণিজ্যিক অংশীদার খুঁজছে। মার্চে ড. ইউনূস চীন সফর করে প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য প্রবেশদ্বার হিসেবে তুলে ধরেন।

তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, “এটি অর্থনৈতিকভাবে পরিচালিত সিদ্ধান্ত। চীন, ভারত কিংবা অন্য কেউ—সবাই বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। এখানে বিশেষ সুবিধা নয়, ব্যবসায় ন্যায্য প্রতিযোগিতাই মূল।

নোবেলজয়ী ড. ইউনূস জানিয়েছেন, নির্বাচন শেষে তিনি আর সরকারে থাকবেন না। “ছাত্রনেতারা আমাকে অনুরোধ করেছিল, এত রক্ত ঝরেছে… আমাকেও কিছু করতে হবে। তাই দায়িত্ব নিয়েছি।

৮৫ বছর বয়সী এই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, তার নেতৃত্ব একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক উত্তরাধিকার তৈরি করবে। “আমাদের তরুণ প্রজন্ম ভোট দেবে, একটি সৎ ও গণতান্ত্রিক সরকার আসবে—এই আশাই করি।

এই সাক্ষাৎকারটি কুয়ালালামপুর সফরের সময় নেওয়া হয়, যেখানে তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও জ্বালানি খাতে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকে সই হয়।

No comments found