নিজেকে সিংহ দাবি করে মোদিকে শিয়াল বললেন থালাপতি বিজয়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In a fiery Tamil Nadu rally, Thalapathy Vijay went viral for calling himself a lion and labeling Modi a fox. Declaring BJP and DMK as rivals, he confirmed his party will not form any alliances.

তামিলনাড়ুর জনসভায় থালাপতি বিজয়ের গর্জন ভাইরাল—নিজেকে সিংহ আখ্যা দিয়ে মোদিকে শিয়াল বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। বিজেপি ও ডিএমকেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঘোষণা দিলেন, তার দল কোনো জোটে যাবে না।

তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে নতুন এক ঝড় তুলেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা থালাপতি বিজয়। মাদুরাইয়ে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় দেওয়া তার বক্তব্য ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। হাজারো সমর্থকের উপস্থিতিতে তিনি এমন কিছু মন্তব্য করেন যা শুধু তার দলের সমর্থক নয়, পুরো ভারতের রাজনীতিতেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

জনসভায় বিজয় বলেন, “সিংহ সবসময় সিংহই থাকে। তার গর্জন আট কিলোমিটার দূর পর্যন্ত প্রতিধ্বনি তোলে। জঙ্গলে যত শিয়ালই থাকুক না কেন, জঙ্গলের রাজা সবসময় সিংহই।” বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি না বললেও পরোক্ষভাবে শিয়াল আখ্যা দিয়েছেন এবং নিজেকে সেই সিংহ হিসেবে তুলে ধরেছেন যিনি যেকোনো পরিস্থিতিতেই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

রাজনৈতিক মহল বলছে, বিজয়ের এই বক্তব্য কেবল একটি সাধারণ রাজনৈতিক মন্তব্য নয়, বরং তার আত্মবিশ্বাস এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অবস্থানকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার এই তুলনা শুধু সমর্থকদের উজ্জীবিত করেনি, বরং বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যেও নতুন আশা জাগিয়েছে।

বিজয় তার বক্তব্যে আরও স্পষ্ট করে দেন, ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে তার দল তামিলগা ভেট্রি কাজগম (টিভিকে) কারো সঙ্গে কোনো ধরনের জোট করবে না। তিনি বলেন, “আমাদের একমাত্র আদর্শিক শত্রু হলো বিজেপি এবং রাজনৈতিক শত্রু হলো ডিএমকে। টিভিকে কোনো সুবিধাভোগীদের দল নয়, তাই তেমন কারো সঙ্গে আমরা জোটবদ্ধ হবো না।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে এআইএডিএমকে ও ডিএমকের আধিপত্য চললেও বিজয়ের মতো এক জনপ্রিয় তারকার রাজনৈতিক আবির্ভাব নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং শহুরে ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তাই তিনি তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলে আসন্ন নির্বাচনের ফলাফলে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে।

তার এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে। বিজয়ের সমর্থকরা তাকে সত্যিকারের “সিংহ” আখ্যা দিয়ে প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে বিজেপি সমর্থকরা এটিকে কটাক্ষ হিসেবে নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই টুইটার, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে বিজয়ের বক্তব্যকে ঘিরে অসংখ্য হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে।

বিজয় যদিও রাজনীতিতে একেবারেই নতুন, তবে তার প্রথম দিককার অবস্থান এবং ভাষণই প্রমাণ করছে যে তিনি কেবল প্রতীকী অংশগ্রহণ করতে আসেননি। বরং দৃঢ়ভাবে রাজনীতিতে জায়গা করে নিতে চান। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যদি তিনি তার জনপ্রিয়তাকে সংগঠিত ভোটে রূপান্তর করতে পারেন, তাহলে ২০২৬ সালের তামিলনাড়ুর নির্বাচন হবে ভারতের অন্যতম বহুল আলোচিত নির্বাচন।

এখন প্রশ্ন একটাই—বিজয়ের এই “সিংহ-গর্জন” কতদূর প্রতিধ্বনি তুলবে? তিনি কি সত্যিই বিজেপি ও ডিএমকের শক্ত ঘাঁটি কাঁপাতে পারবেন? সময়ই সেই উত্তর দেবে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, থালাপতি বিজয় ইতোমধ্যেই দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত নতুন নাম হয়ে উঠেছেন।

No comments found