close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নেত্রকোনায় রবিদাস পরিবার উচ্ছেদ: বিচারের দাবিতে নাগরিক উদ্যোগ এর সংবাদ সম্মেলন..

Mahamud Mithu avatar   
Mahamud Mithu
নেত্রকোনায় রবিদাস পরিবারের ওপর হামলা ও উচ্ছেদ চেষ্টা নিয়ে বিডিইআরএম ও নাগরিক উদ্যোগের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।..

নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার জালশুকা বাজার এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ও নাগরিক উদ্যোগ। এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবে ২৬ জুন ২০২৫ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায়।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিডিইআরএম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস। সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএম নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি নন্দলাল রবিদাস (মাস্টার)। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুনীল রবিদাস, বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ)-এর প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রবিন রবিদাস, বাংলাদেশ রবিদাস ছাত্র ফোরাম (বিআরএসএফ)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক এস. স্বাধীন চন্দ্র রবিদাস প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, পূর্বধলার চিহ্নিত দুর্বৃত্ত কর্তৃক রবিদাস সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবারের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং লুটপাট, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ফলে নারী ও শিশুসহ ২২ জন সদস্য আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে এবং নিন্দিত হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে শিপন কুমার রবিদাস বলেন, বিডিইআরএম ও নাগরিক উদ্যোগের প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়াকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির পরিপন্থী। উচ্ছেদের এহেন ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুনীল রবিদাস জানান, তারা প্রায় ৫০ বছর ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছেন। অভিযুক্ত পক্ষ জমিটি নিজেদের বলে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। ৬ জুন ঈদ-উল-আযহার আগে প্রথম হামলা হয়, যেখানে সুনীল রবিদাস ও তার পরিবারের সদস্যদের মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। পুনরায় ৮ জুন ও ১০ জুন হামলা চালিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে এবং মূল্যবান সামগ্রী লুট করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনা সমাজে ও রাষ্ট্রের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তারা। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর স্থায়ী আবাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। সামগ্রিকভাবে, এই ঘটনা বাংলাদেশের সমাজে দলিত সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা শুধু আইনি ব্যবস্থার দুর্বলতাই প্রকাশ করছে না, বরং সমাজে বৈষম্য ও অব্যবস্থাপনার প্রমাণ দেয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এই ঘটনাকে হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশনের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা বলছেন, সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই সমস্যার সমাধান করা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা।

সামাজিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা সমাজে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতায় ব্যাঘাত ঘটায়। তারা উল্লেখ করেন, সরকারের উচিত এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

コメントがありません