close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

‘নেক্সট গ্লোবাল স্টারস’ ট্রায়াল: প্রবাসী ফুটবলারে নতুন সম্ভাবনার খোঁজে বাফুফে..

Mehedi Hasan avatar   
Mehedi Hasan
বাংলাদেশ ফুটবলে যেনো নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সম্প্রতি ইংলিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরীর জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ প্রকাশের পর থেকেই বাড়ছে প্রবাসী ফুটবলারদের দেশের হয়ে খেলার আগ্রহ।..

সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এবার আয়োজন করেছে ব্যতিক্রমধর্মী এক ট্রায়ালের—‘বাফুফে নেক্সট গ্লোবাল স্টারস’। ২৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে এই ট্রায়াল, যেখানে অংশ নিচ্ছেন ১৪টি দেশের ৫২ জন প্রবাসী ফুটবলার।

বুধবার (২৫ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রায়ালের বিস্তারিত তুলে ধরেন বাফুফের সহ-সভাপতি ও ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তার ভাষ্যে স্পষ্ট, প্রবাসী ও স্থানীয়—উভয় খেলোয়াড়কেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছে ফেডারেশন। যাঁরা আসছেন, তাঁরা সকলেই নিজেদের খরচে দেশে এসেছেন এবং এই আয়োজন তাদের প্রতিভা যাচাইয়ের একটি মঞ্চ।

এই তিনদিনের ট্রায়ালের প্রথম দুই দিনে সকাল-বিকাল দুই সেশন করে হবে স্কিল যাচাই। শেষ দিন, অর্থাৎ ৩০ জুন নিজেদের মধ্যে ৯০ মিনিটের একটি ম্যাচ খেলবেন অংশগ্রহণকারীরা। প্রত্যেক খেলোয়াড় অন্তত ৬০ মিনিট খেলার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু।

এই ট্রায়াল মূল্যায়ন করবেন দেশের শীর্ষ কোচ ও সাবেক তারকা ফুটবলাররা। কমিটিতে থাকছেন মারুফুল হক, মাহবুব হোসেন রক্সি, মিন্টু, আলফাজ, ছাইদ হাসান কানন ও টিটু নিজেই। তবে প্রশ্ন উঠেছে মূল্যায়ন কমিটির ভারসাম্য নিয়ে। কোচিং লাইসেন্সধারী অনেক অভিজ্ঞ কোচ—যেমন শফিকুল ইসলাম মানিক, সত্যজিৎ দাশ রুপু কিংবা কামাল বাবু—এই কমিটিতে নেই। অথচ সাম্প্রতিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত রক্সি রয়েছেন তালিকায়। তিনটি বড় ক্লাব—আবাহনী, মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংসের প্রতিনিধিত্ব যেন নিশ্চিত করেই সাজানো হয়েছে এই কমিটি।

ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ৫২ জন ফুটবলারের বয়স ১৪ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। মূলত আসন্ন এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাই পর্বের জন্য খেলোয়াড় খুঁজতেই এই উদ্যোগ। তবে কেউ যদি অতুলনীয় প্রতিভা দেখাতে পারেন, তাহলে তাকে সরাসরি জাতীয় দলেও ডাকা হতে পারে।

তিন দিনের এই ট্রায়ালের শেষ দিনে দেশের বিভিন্ন ক্লাবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যেন তারা এসব খেলোয়াড়কে সরাসরি দেখতে পারে। ক্লাবগুলোর সঙ্গে প্রবাসী খেলোয়াড়দের যোগসূত্র তৈরি করার উদ্যোগও রয়েছে ফেডারেশনের। তবে ফেডারেশন স্পষ্ট জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে তাদের কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই; এটা একান্তই ক্লাব ও খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত বিষয়।

এদের কারা কোন পর্যায়ে খেলেন—তা নিয়ে পুরো তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি বাফুফে। তবে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর জানিয়েছেন, কেউ কেউ একাডেমি পর্যায়ে খেলেন, কেউ আবার বিভিন্ন স্তরে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে যুক্ত। তাদের অনেকেই আগেভাগেই ভিডিও, ছবি ও সিভি পাঠিয়েছেন; কিছু ফুটবলার অবশ্য সিভি জমা দেননি।

এই ট্রায়াল নিয়ে বাফুফের সহ-সভাপতি জাহেদী বলেন, এই উদ্যোগে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে ডেভেলপমেন্ট ও টেকনিক্যাল কমিটি। সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমেই নেওয়া হয়েছে প্রতিটি সিদ্ধান্ত। আগে একক সিদ্ধান্তে যেসব কাজ হতো, এখন তা হচ্ছে আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে। প্রয়োজনে ইমারজেন্সি কমিটির মাধ্যমে বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়।

দেশের ফুটবলে এই প্রবাসী ঢেউ কতটা প্রভাব ফেলবে, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা। তবে একথা বলাই যায়—‘নেক্সট গ্লোবাল স্টারস’ নামক এই উদ্যোগে আগামী দিনের জাতীয় দলের এক বা একাধিক তারকা গড়ে উঠলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

No comments found