নানা নাটকীয়তা, প্রার্থীদের প্রত্যাহার ও বয়কটের পর অবশেষে শুরু হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। সকাল দশটা থেকেই ভোট চলছে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে।
নানা নাটকীয়তা, প্রত্যাহার ও বয়কটের পর অবশেষে শুরু হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই প্রার্থীদের উপস্থিতি, সমর্থকদের ব্যস্ততা, আর গণমাধ্যমের কোলাহলে হোটেল প্রাঙ্গণ সরগরম হয়ে ওঠে। দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও নানা অনিশ্চয়তার পর এই নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ।
নির্বাচনের আগের রাতেও ঘটেছে নতুন নাটকীয়তা। ক্যাটাগরি-২ থেকে প্রার্থী ফায়াজুর রহমান ভুঁইয়া শেষ মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর ফলে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪ জন প্রার্থী। নতুন মুখ হিসেবে যুক্ত হয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। এই ১৪ জনের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হবেন ১২ জন পরিচালক।
এদিকে বিভাগ ক্যাটাগরি থেকে ইতোমধ্যে ৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এই ক্যাটাগরিতে ভোটের কোনো প্রয়োজন হয়নি। ভোটারদের উপস্থিতি ও আগ্রহ দেখে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনের প্রতি প্রার্থীদের প্রত্যাশা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার তীব্রতা কতটা।
বিসিবি নির্বাচন ২০২৫: ভোটের চিত্র
মোট ভোটার সংখ্যা ১৫৬ জন। এর মধ্যে ৯৮ জন ভোটার সরাসরি ভোট প্রদান করছেন, আর ৫৮ জন ভোট দিচ্ছেন ই-ব্যালটের মাধ্যমে। প্রযুক্তি ও আধুনিকতার সমন্বয়ে এবারই প্রথমবারের মতো ই-ব্যালট ব্যবস্থার এমন ব্যাপক প্রয়োগ করা হয়েছে।
ক্যাটাগরি ভিত্তিক ভোট বিভাজন:
-
ক্যাটাগরি-১ (জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা)
মোট ভোট ৩৫, যার মধ্যে ১৯ জন ই-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিচ্ছেন। -
ক্যাটাগরি-২ (ক্লাব)
মোট ভোট ৭৬, এর মধ্যে ৩৪ জন ই-ব্যালট ব্যবহার করছেন। -
ক্যাটাগরি-৩ (বিশেষ সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাবোর্ড ও সার্ভিসেস দল)
মোট ভোট ৪৫, যার মধ্যে মাত্র ৫ জন ই-ব্যালটে ভোট দিচ্ছেন।
নির্বাচনের প্রতিটি ধাপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হোটেল প্রাঙ্গণে প্রবেশের আগে প্রতিটি ভোটার ও প্রার্থীর পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীরাও বিশেষ পাস ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ চলছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে।
এই নির্বাচনকে ঘিরে ক্রিকেট অঙ্গনে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। নতুন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হলে তারা আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন। তাই এবারের নির্বাচনকে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট।”
নাটকীয়তা, প্রত্যাহার, বয়কট এবং শেষ মুহূর্তের কূটকৌশল শেষে বিসিবি নির্বাচন অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছেছে। এখন সকলের চোখ ফলাফলের দিকে—কে আসবেন বোর্ডের ক্ষমতায়, কে বিদায় নেবেন ক্রিকেট প্রশাসনের মঞ্চ থেকে—তা জানতেই ক্রিকেটপ্রেমীরা অপেক্ষা করছেন।