সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে অশ্লীল ভাষা ও কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গির অভিযোগে আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনি আইনি জটিলতায় পড়েছেন। আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুল কাদের (এ কে ফয়সাল) তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট ফয়সাল গণমাধ্যমকে জানান, 'তনি তার ফেসবুক লাইভে একাধিকবার এমন ভাষা ও অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেছেন, যা সমাজ, পরিবার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি। এসব বক্তব্যে নারীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ পেয়েছে এবং কখনো কখনো তিনি ‘কাপড় খুলে মারধর’ করার হুমকিও দিয়েছেন—যা স্পষ্টতই সামাজিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে।'
আইনি নোটিশে তনিকে ভবিষ্যতে অশ্লীলতাপূর্ণ ভিডিও তৈরি ও প্রচার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইতোমধ্যে প্রকাশিত এ ধরনের ভিডিওগুলো অনতিবিলম্বে সামাজিক মাধ্যম থেকে মুছে ফেলতেও বলা হয়েছে। নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, নির্দেশনা অমান্য করে তিনি যদি আবারও এ ধরনের আচরণে লিপ্ত হন, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোবাইয়াত ফাতেমা তনি সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তার মন্তব্য ও লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন। তবে এবার বিষয়টি আইনি পর্যায়ে পৌঁছানোয় নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এর আগে, ২০২৩ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজধানীর পুলিশ প্লাজায় অবস্থিত তনির শোরুম ‘সানভি’স বাই তনি’-তে অভিযান চালায়। সেই সময়েও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তনির বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগের পুনরাবৃত্তি তার ব্যবসায়িক ও সামাজিক অবস্থানকে বিপর্যস্ত করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
তনির বিরুদ্ধে এই আইনি নোটিশ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তা সমাজে একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
একইসঙ্গে, এই ঘটনা নারীর সামাজিক অবস্থান ও তাদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং সামাজিক মাধ্যমে শালীনতা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই ধরণের আইনি পদক্ষেপ ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধ কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তবে এই ঘটনা সম্পর্কে তনির কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি এবং তিনি এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আইনি নোটিশের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে বিষয়টি ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচুর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে এই ধরণের ঘটনাগুলি যে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তা তনির এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে তুলেছে। এটি আমাদের সমাজের নৈতিকতার প্রতিচ্ছবি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার সম্পর্কে আরও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে এসেছে।