close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন গ্রেফতার, সহিংসতা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পাঁচ দিনের রিমান্ডে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Kamal Hossain, UP Chairman of Dhamgar Union and General Secretary of Jatiya Party’s Bandar unit in Narayanganj, has been arrested by police in connection with multiple criminal cases, including attemp..

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টি নেতা কামাল হোসেন গ্রেফতার: নাশকতা, পুলিশ হত্যা চেষ্টা ও রিমান্ড আবেদন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং জাতীয় পার্টির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ, যার মধ্যে রয়েছে সহিংস নাশকতা, পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতায় প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ধামগড় ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “কামাল হোসেনকে একটি নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় সক্রিয় ছিলেন।”

বুধবার দুপুরে কামাল হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, “রিমান্ড শুনানি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। নারায়ণগঞ্জের ক্ষমতাসীন রাজনীতির এক অংশ হিসেবে ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। তাকে নিয়ে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই নানা অভিযোগ রয়েছে — জমি দখল, চাঁদাবাজি, এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বহুবার।

২০১৯ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটারবিহীন পরিবেশে নির্বাচিত হয়ে চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার কর্মকাণ্ড আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের দাবি, গত বছরের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত আন্দোলনে কামাল হোসেন নেতৃত্বে থাকা একটি দল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ গুরুতর আহত হয়। ভিডিও ফুটেজেও তাকে অস্ত্র হাতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চারটি মামলার মধ্যে একটি সরাসরি পুলিশের ওপর আক্রমণের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলোতে নাশকতা, জনমনে ভীতি সৃষ্টি এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ধামগড় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, স্থানীয় রাজনীতির প্রভাবশালী ব্যক্তির এভাবে গ্রেফতার ও রিমান্ডে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। বিশেষ করে যখন ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে, তখন আইনি প্রক্রিয়া আরও জোরদারভাবে পরিচালনার দাবি উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেও।

No comments found