চাঁদাবাজির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের জেলা সভাপতি টি এইচ তোফাকে। ডিবি পুলিশের দাবি, তিনি অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের জেলা সভাপতি টি এইচ তোফাকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি ডিবি টিম অভিযান চালিয়ে তোফাকে আটক করে এবং পরবর্তীতে তাকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, টি এইচ তোফা দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি একসময় সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অবৈধ প্রভাব খাটানোর অভিযোগ জমা হতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তার বিরুদ্ধে বহু তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
একই রাতে আরেকটি অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলামকেও আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যমতে, এস এম আসলাম দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে আসছিলেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, "টি এইচ তোফা ও এস এম আসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির পাশাপাশি আরও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।"
এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে তোফা ও আসলামের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাউকে রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নয়, অপরাধমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই পদক্ষেপকে অনেকে স্বাগত জানালেও, কেউ কেউ বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করার জন্যই এ ধরনের গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, এই দুই নেতার গ্রেফতার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোন দিকে নিয়ে যায়। তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত অপরাধ প্রমাণিত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ