নারায়ণগঞ্জ বন্দরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও পোনামাছ অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সূচনা হয়েছে এক অনন্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে। এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি”। স্থানীয় পর্যায়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে এবং জনগণকে মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সোমবার সকালে বন্দর উপজেলা প্রাঙ্গণে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য র্যালি, যা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা প্রাঙ্গণে পোনামাছ অবমুক্ত করে দেশীয় মাছ সংরক্ষণের কার্যক্রমের প্রতীকী ঘোষণা দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী কর্মসূচি শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রফিক আবেদীন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
সভায় বক্তব্য রাখেন বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদ, শিক্ষা অফিসার আবদুল কাইয়ুম খান, সমবায় অফিসার আলাউদ্দিন, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সরকার আশরাফুল ইসলাম এবং ডা. তাহমিদ হাসান ইমতিয়াজসহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, দেশীয় মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। এটি শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশকেই সমৃদ্ধ করবে না, বরং সাধারণ মানুষকে পুষ্টি সরবরাহেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আলোচনা শেষে তিনজন সফল মৎস্যচাষীকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট ও সনদপত্র। স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করেন, এ ধরনের উৎসব ও কর্মসূচি সাধারণ মানুষকে দেশীয় মাছ রক্ষায় আরও সচেতন করবে।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিরা জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। তাই এই মৎস্য সপ্তাহ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দেশীয় সম্পদ সংরক্ষণের এক নতুন অঙ্গীকার। সরকার ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আবারও দেশি মাছের সমৃদ্ধ ভাণ্ডারে পরিণত হতে পারবে।