নারায়ণগঞ্জ বন্দরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লিয়াকত আলী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদ, কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সালেহ আহাম্মদ পাঠান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজোয়ান আহমেদ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সরকার আশরাফুল ইসলাম, বিএম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আজিজুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি।
সভায় বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিকভাবে গুরুত্ব পাওয়া নানা সমস্যার ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। বিশেষ করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ওপর জোর দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জোরপূর্বক বিয়ে শুধু তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে না, বরং সমাজের উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করছে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইভটিজিং বা নারীদের প্রতি হয়রানি প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও জনসমাগমস্থলে নজরদারি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।
সভায় নবীগঞ্জ–মোগড়াপাড়া সড়ক সংস্কার এবং মদনগঞ্জ থেকে মদনপুর হাইওয়ে সংস্কারের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। জনসাধারণের ভোগান্তি কমাতে এসব উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরি, তালতলা ইস্পাহানিতে ডাকাতি, এবং কলকারখানায় শিশুশ্রমের মতো সমস্যাগুলোকেও গুরুত্ব সহকারে আলোচনায় আনা হয়। শিশুশ্রম বন্ধে কঠোর নজরদারি ও প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
মাদকের ভয়াবহতা রোধেও সভায় বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস থেকে বাঁচাতে মাদকের সরবরাহ ও ব্যবহার দুটোই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পরিবার ও সমাজকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে বন্দর উপজেলাকে একটি নিরাপদ, আধুনিক ও উন্নত এলাকায় রূপান্তর করা সম্ভব হবে।