নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলাকে বিভক্ত করে দুটি পৃথক সংসদীয় আসনে সংযুক্ত করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত এই আসন পুনর্বিন্যাসকে 'জনস্বার্থবিরোধী' ও 'অখণ্ডতা নষ্টকারী' উল্লেখ করে সোমবার (৪ আগস্ট) স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয় বন্দর উপজেলা পরিষদ চত্বরে। এতে অংশ নেয়া হাজারো মানুষ এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাজী নূরউদ্দিন আহম্মেদ। বক্তৃতা দেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম রিপন, ছাত্রনেতা আবির হোসেন, বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ পনেছ, মেসবাউদ্দিন, মো. সেলিম মিয়া, শাহাদুল্লাহ মুকুল, যুবদল নেতা আমির হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কয়েকটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের অধীনে ছিল। কিন্তু নতুন যে প্রস্তাবটি নির্বাচন কমিশন দিয়েছে, তা ঐতিহাসিক ও প্রশাসনিক ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধে। এ ধরনের বিভাজন প্রস্তাব জনগণের মতামতের পরিপন্থী এবং স্থানীয় উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
বক্তারা আরও বলেন, এই আসন পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব দুর্বল হয়ে পড়বে এবং রাজনৈতিক বিভ্রান্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রশাসনিকভাবে এ ধরনের পরিবর্তন কোনো যুক্তিযুক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়ায় না বলেও মত প্রকাশ করেন তাঁরা। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক আসন পুনর্বিন্যাস প্রস্তাব অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের (সদর-বন্দর) সীমানা পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে বন্দর থানার অংশ বিশেষকে নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ দুটি পৃথক সংসদীয় আসনে বিভক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভ শেষে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি লিখিত আপত্তিপত্র দাখিল করেন। এই আপত্তিপত্রে তারা অনুরোধ করেন, যেন বন্দর উপজেলার ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখা হয় এবং জনগণের ঐক্য ও স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শুধু রাজনৈতিক প্রতিবাদ ছিল না, এটি ছিল একটি জনগণের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান—যেখানে দলমত নির্বিশেষে স্থানীয়রা তাঁদের এলাকার স্বার্থ রক্ষায় কণ্ঠ মিলিয়েছেন।