বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভিযোগ— নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদকে পুনরায় প্রাসঙ্গিক করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা চলছে, যা দেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের জন্য হুমকি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভিযোগ করেছে যে, জুলাইবিরোধী শক্তি মূলধারার কিছু গণমাধ্যম, টকশো, সংবাদপত্রের কলাম এবং বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এমন একটি বয়ান তৈরি করছে, যার মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ, মুজিববাদ এবং বাকশালকে পুনরায় প্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টা চলছে। সংগঠনটির দাবি, এ ধরনের কার্যকলাপ শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের জন্য মারাত্মক হুমকি।
সোমবার (১১ আগস্ট) দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি কিছু রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম মহল প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, যারা মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। তারা অভিযোগ করেন, বিগত দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগ গুম, খুন, নির্যাতন ও বিরোধী মত দমনের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম রেখেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে গণহত্যা চালিয়ে এই ফ্যাসিবাদকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করেছে। তবে আন্দোলনের মুখে তারা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালেও প্রশাসন, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাদের বহু স্থাপিত উপাদান এখনো সক্রিয় রয়েছে। এসব উপাদানই এখন নানা উপায়ে মুজিববাদী মতাদর্শকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, জুলাইবিরোধী শক্তি কর্তৃক যদি এ ধরনের অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে তারা সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিরোধ করবে। পাশাপাশি তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের প্রতিষ্ঠিত সব উপাদানকে দ্রুত ও কার্যকরভাবে নির্মূল করতে হবে।
সংগঠনটির মতে, দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষায় এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি, নইলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ আবারও হুমকির মুখে পড়বে।