close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে কখনোই আপস করব না: আয়াতুল্লাহ খামেনি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি, ট্রাম্পের মন্তব্য, এমনকি নিজের জীবন হুমকির মুখেও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি জানিয়ে দিলেন—জায়নবাদীদের সঙ্গে আপস নয়, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। খামেনির এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ইর..

জীবনের ঝুঁকি, আন্তর্জাতিক চাপ এবং আমেরিকান প্রেসিডেন্টের প্রকাশ্য হুমকি—সবকিছুকেই পাশ কাটিয়ে আপসহীন অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একাধিক পোস্টে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইরান কখনোই জায়নবাদী শক্তির কাছে মাথানত করবে না। বরং এখন ‘যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এক পোস্টে খামেনি বলেন,
“আমরা জায়নবাদীদের প্রতি কোনো দয়া দেখাবো না।”
আরেকটি পোস্টে তিনি আরও বলেন,
“যুদ্ধ শুরু হয়েছে।”
এই ঘোষণায় পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা।

এই প্রতিক্রিয়া আসে এমন এক সময়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইরানকে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ করতে হবে, নতুবা যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে আরও তীব্র হামলা চালাবে। তিনি এমনকি বলেছিলেন, “আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন, তবে এখনই তাকে হত্যা করবো না।”

খবরে আরও জানা যায়, গত সপ্তাহে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে খামেনিকে হত্যার একটি পরিকল্পনা উত্থাপন করা হলে সেটিকে ট্রাম্প নিজে ভেটো দেন। কিন্তু ভেটো দেওয়ার অর্থ এই নয় যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে থামাতে চেষ্টা করছে। বরং ইরান-বিদ্বেষী অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখন আরও প্রকাশ্য ও সংঘাতমুখী।

ইরান ইন্টারন্যাশনাল নামের এক সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন, বিশেষত ইরানের আকাশসীমার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই সমর্থন আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে—ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত যদি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলে, তাহলে সেটি হতে পারে এক ভয়ঙ্কর পরিণতির সূচনা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর অবস্থান জানে, অপরদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত সামরিক সহযোগিতায়ও যুক্ত।

বিভিন্ন গোয়েন্দা বিশ্লেষক মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলিকে সহজেই গুঁড়িয়ে দিতে পারে, যা এই যুদ্ধকে সরাসরি পরমাণু বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রকাশ্য বক্তব্য ইঙ্গিত দেয়, তিনি পশ্চিমাদের হুমকি ও প্রলোভন কোনোটাকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। বরং তিনি এখন যুদ্ধের প্রস্তুতির দিকেই এগোচ্ছেন। এই মনোভাব শুধু ইরানকেই নয়, পুরো মুসলিম বিশ্বকে একটি কৌশলগত বিভাজনের সামনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।

তবে খামেনির এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই উত্তেজনা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে সেটি শুধু ইরান-ইসরায়েল নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

খামেনির কথা থেকে স্পষ্ট—তিনি মৃত্যু ভয়ে ভয় পান না, তিনি মাথানত করেন না। জায়নবাদীদের বিরুদ্ধে এই লড়াই তার কাছে শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং আদর্শিক এবং ন্যায়ের প্রশ্নে অবিচল অবস্থান। এখন সময় বলবে, এই লড়াই কোথায় গিয়ে ঠেকে—কূটনৈতিক টেবিলে, নাকি যুদ্ধের ময়দানে।

No comments found


News Card Generator